করোনাকালে দীর্ঘ দিন স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল। প্রায় তিন বছর মতো। এতদিন ছাত্রছাত্রীদের না পড়িয়েই সরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকারা বেতন পেয়েছেন বলে অনেকের অভিযোগ। যদিও অনলাইনে ক্লাস হয়েছে। কিন্তু স্মার্ট ফোন বা ল্যাপটপে কতটা পড়াশোনা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই আবহে স্রোতের প্রতিকূলে হেঁটে কার্যত নজির সৃষ্টি করলেন বিহারের এক কলেজের অধ্যাপক। বিহারের মুজাফফরপুর নীতিস্বর কলেজের সহককারী অধ্যাপক লালন কুমার নিজের ৩৩ মাসের বেতন বাবদ প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিলেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তে সাধুবাদের পাশপাশি অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
হিন্দির অধ্যাপক লালন জানাচ্ছেন, মাসের পর মাস ক্লাস হয়নি। অনলাইনে ক্লাস হলেও সেখানে হাতে গোনা কয়েকজন পড়ুয়াই উপস্থিত ছিলেন। তাই বিনা পরিশ্রমে এভাবে বেতন নেওয়া মানে নিজের শিক্ষাকে গলা টিপে হত্যা করা। শুধু তাই নয় ওই অধ্যাপকের আরও অভিযোগ, কলেজ খোলার পরও ক্লাসের সেই পরিবেশ আর নেই। পড়ুয়ারা প্রায় কেউ ক্লাসে আসেন না। এই কারণে কিছুটা বিবেগের তাগিদেই ২ বছর ৯ মাসের মোট ২৩ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন।
লালনের এই সিদ্ধান্ত শুনে প্রথমে কলেজ কর্তৃপক্ষও আকাশ থেকে পড়ে। পরে লালনই তাঁদের বুঝিয়ে বেতন ফিরিয়ে নিতে রাজি করায়। এদিকে হিন্দি অধ্যাপকের এই ঘটনায় দেশজুড়ে শোরগোল শুরু হয়েছে। তবে লালন যে কলেজ পড়ান সেখানকার প্রিন্সিপালের অভিযোগ, উনি আসলে দীর্ঘদিন ধরেই স্নাতকোত্তর স্তরে বদলি চাইছেন। সেটা না মেলায় বেতন ফিরিয়ে দিয়ে চাপ তৈরি করতে চাইছেন।
এদিকে, বিআর আম্বেদকর বিহার ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার জেনারেল বলেন, লালন যা করেছেন তা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত। সেই সঙ্গে আমারা উপাচার্যের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। ওই কলেজে কেন পড়ুয়ারা অনুপস্থিত থাকছে সে নিয়েও প্রিন্সিপালের কাছে জানতে চাওয়া হবে।
Comments are closed.