ভারত সরকারকে কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে। খুব দ্রুত তা করতে না পারলে দেশের তরুণ সম্প্রদায়কে কোনওভাবেই আটকে রাখা যাবে না, তাঁরা কিন্তু রাস্তায় নেমে পড়বে। এক ভয়াবহ অবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। বললেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন গভর্নর তথা অর্থনীতিবিদ রঘুরাম রাজন।
দেশের অর্থনীতিতে ভাঁটার টান। বাজারে চাহিদা নেই। বোঝার উপর শাকের আঁটির মতো করোনাভাইরাস অতিমারি অর্থনীতির কোমর ভেঙে দিয়েছে। অসংখ্য মানুষ কাজ হারিয়েছেন, ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে অগুন্তি ব্যবসার। এই পরিস্থিতিতে যুব সমাজের হাতে কাজ তুলে দিতে হবে। এছাড়া আর কোনও উপায় নেই। আর সেই দায়িত্ব নিতে হবে সরকারকে। সম্প্রতি একটি ওয়েবিনারে ভারতের অর্থনীতির হাল হকিকত বর্ণনা করতে গিয়ে এ কথা বলেন রাজন।
বুথ স্কুলের ফিনান্সের অধ্যাপক বলছেন, চাকরি নেই এমন যে কোনও তরুণকে আপনি সহজেই অন্য কিছুতে ভুলিয়ে রাখতে পারেন। কিন্তু তা সাময়িক। আপনি যদি কাজের সুযোগ তৈরি করতে না পারেন তাহলে সোশ্যাল মিডিয়া বা ফেক নিউজ দিয়ে আপনি বেশিদিন ভুলিয়ে রাখতে পারবেন না। কিছুদিনের মধ্যেই আপনার কৌশল ব্যর্থ হবে। আর যুব সমাজ বিক্ষোভে রাস্তায় নেমে আসবে। তাই তরুণ সম্প্রদায়ের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করা এখন সরকারের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত, মনে করেন রঘুরাম রাজন।
প্রধান মন্ত্রী মোদীর আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের সমালোচনা এসেছে আরবিআইয়ের প্রাক্তন গভর্নরের কাছ থেকে। রঘুরাম রাজন বলছেন, আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পে যে কাজের কাজ কিছু হবে না, তা বহু আগে প্রমাণিত। চিনের উদাহরণ দিয়ে রাজন বলেন, শি জিনপিংয়ের দেশ গোটা পৃথিবী থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে চিনে উৎপাদন করে, আবার তা বিশ্বের বাজারে বিক্রি করছে। সেখানে ভারত বিদেশি মালের উপর কর চাপিয়ে পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলছে। রাজনের প্রশ্ন, কাঁচামালের দাম যদি বেশি হয় তাহলে দেশে সস্তায় উৎপাদন হবে কী করে? ভারতের উচিত গ্লোবালাইজেশনের যতটা সম্ভব ফায়দা তোলার চেষ্টা করা, বিশ্বের দরজা বন্ধ করে দিয়ে তা হবে না, সাফ জানাচ্ছেন রঘুরাম রাজন। এই পরিস্থিতিতে রাজন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তরুণ দেশের যুব সম্প্রদায়ের জন্য পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ তৈরিকে। সরকার শুনছে কি?
Comments are closed.