২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবির দায় নিজের ঘাড়ে নিয়ে জাতীয় সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। শীর্ষ নেতৃত্বের অনুরোধ, আবেদন সত্ত্বেও কংগ্রেস সভাপতির পদে থাকতে নারাজ ছিলেন তিনি। এরপর মোদী সরকারের একাধিক নীতির বিরোধিতা করলেও নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি, এনপিআর নিয়ে যখন দেশজুড়ে তীব্র হচ্ছে আন্দোলন, তখন বিরোধী মুখ হিসেবে সেভাবে ময়দানে দেখা যায়নি রাহুলকে। মাঝে-মধ্যে ট্যুইট করলেও মূলত ছুটিছাটার উপরই ছিলেন ওয়েনাডের কংগ্রেস সাংসদ। তবে এবার ‘নতুন ইনিংস’ শুরু করছেন রাহুল গান্ধী। তৈরি হচ্ছেন রাহুল বনাম মোদী দ্বৈরথের জন্য। তাঁর দলের নেতাদের অন্তত তেমনই মত। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যে রাজ্যে অর্থনৈতিক মন্দা, বেকারত্ব সহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে প্রচারে বের হচ্ছেন রাহুল গান্ধী।
৫০ বছর বয়সী কংগ্রেস নেতার রাজ্য সফর শুরু হচ্ছে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান দিয়ে। মঙ্গলবার রাজস্থানের জয়পুরে ‘যুব আক্রোশ’ জনসভা করেন তিনি। রাহুলই ছিলেন সেই সভার প্রধান বক্তা। কংগ্রেসের একাধিক নেতা দাবি করছেন, বস্তুত এই সভার মধ্য দিয়েই রাহুল তাঁর নতুন ইনিংস শুরু করতে চলেছেন। ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই দলের বহু নেতা রাহুলকে সমানে অনুরোধ জানিয়ে চলেছেন দলের হাল ধরার জন্য। কিন্তু রাহুলের তরফে এখনও গ্রিন সিগন্যাল আসেনি।
এনআরসি, এনপিআর ও নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যখন দেশজোড়া বিক্ষোভ ও আন্দোলনের আঁচ বাড়ছে, তখন বেকারত্ব, অর্থনৈতিক মন্দা, দেশের সংবিধান রক্ষাকে কেন প্রধান ইস্যু করছেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, এনআরসি, এনপিআর দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে আমজনতার নজর ঘোরাতে চাইছে মোদী সরকার। বর্তমান আন্দোলনের ইস্যু তো থাকবেই, কিন্তু মোদী সরকারের আমলে অর্থনৈতিক দুরবস্থাই প্রাধান্য পাবে রাহুলের প্রচার সভাগুলিতে। রাজস্থানের পর আগামী ৩০ জানুয়ারি তাঁর কেরল সফর, তারপর রয়েছে ঝাড়খণ্ড সহ অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি। সেগুলি শেষ হলে বিজেপির গড়গুলোতে পা রাখবেন রাহুল।
রাহুলের এই তৎপরতাকেই দ্বিতীয় ইনিংস বলছেন কংগ্রেসের সিংহভাগ নেতা। সাম্পতিক সময়ে একাধিক রাজ্যে বিজেপি বিধানসভা ও উপনির্বাচনে হেরেছে, এই অবস্থায় রাহুলকে ফেরত আনতে চাইছে কংগ্রেস।
Comments are closed.