সারা বিশ্বে ৯০ লক্ষেরও বেশি মানুষ করোনা সংক্রমণের শিকার। ভারতে এই সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাড়ে চার লক্ষ। এখনও সঠিক কোনও চিকিৎসা পদ্ধতি পাওয়া যায়নি। চলছে বিভিন্ন ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ৷ এই পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে করোনার আয়ুর্বেদিক ওষুধ ‘করোনিল’ (Coronil) জনসমক্ষে আনল যোগগুরু রামদেবের সংস্থা পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ!
মঙ্গলবার হরিদ্বারে পতঞ্জলি যোগপীঠে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনার এই আয়ুর্বেদিক ওষুধ সামনে আনেন রামদেব নিজেই। সাংবাদিক বৈঠকে রামদেব দাবি করেন, তাঁদের তৈরি এই ওষুধ ১০০ শতাংশ ফল দেবে। ৫ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে সেরে উঠবেন রোগী।
তাঁর দাবি, পরীক্ষামূলকভাবে এই ওষুধ যত করোনা সংক্রমিতের উপর ব্যবহার করা করা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অশ্বগন্ধা, গুলঞ্চ ও তুলসীর মিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে করোনা প্রতিরোধী ওষুধ। ৩০ দিন ব্যবহার করা যাবে এমন একটি করোনিল কিটের দাম পড়বে ৫৪৫ টাকা। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পতঞ্জলির এই করোনা প্রতিষেধক বাজারে চলে আসবে বলে জানান রামদেব।
সোমবারই এই ওষুধের বাজারে আনার কথা ট্যুইট করে জানিয়েছিলেন সংস্থার সিইও আচার্য বালকৃষ্ণ। ট্যুইটারে লিখেছিলেন, ‘গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি, আগামীকাল যোগপীঠ হরিদ্বারে করোনা প্রতিরোধে প্রমাণিত আয়ুর্বেদিক ওষুধ ‘করোনিল’ সামনে আনতে চলেছি আমরা।’
সপ্তাহ খানেক আগেই আচার্য বালাকৃষ্ণ জানিয়ে দিয়েছিলেন, করোনা নিরাময়ে তাদের আয়ুর্বেদিক ওষুধ ১৪ দিনের মধ্যেই করোনা রোগীকে সুস্থ করে তুলবে। আর মঙ্গলবার রামদেব বলেন, সারা বিশ্ব তাকিয়ে ছিল করোনা প্রতিষেধকের দিকে। আর আজ গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি, করোনিল নামে সেই প্রতিষেধক তৈরি করে ফেলেছি আমরা। রামদেবের সংস্থার তরফে জানানো হয়, পতঞ্জলি রিসার্চ ইনস্টিউট ও জয়পুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (NIMS)-এর গবেষক দল যৌথভাবে এই প্রতিষেধক তৈরিতে হাত লাগায়। এই ওষুধের উৎপাদন করছে পতঞ্জলির অধীনস্থ দিব্যা ফার্মেসি। রামদেব বলেন, ১০০ জন রোগীর উপর ক্লিনিক্যাল স্টাডি চালান গবেষকরা। তাতে তিন দিনের মধ্যে ৬৫ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। আর এক সপ্তাহের মধ্যেই ১০০ শতাংশ রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছেন। তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, আমাদের তৈরি করোনা প্রতিষেধক প্রয়োগে সুস্থতার হার ১০০ শতাংশ। এমনকী ভেন্টিলেটর সাপোর্টে থাকা রোগীর উপর এই ওষুধ ব্যবহার করেও সুফল মিলেছে। পর্যাপ্ত গবেষণা করেই এই প্রতিষেধক বাজারে আনছেন বলে জানান পতঞ্জলির প্রতিষ্ঠাতা। রামদেবের কথায়, বৈজ্ঞানিক বিধি মেনেই করোনার প্রতিষেধক প্রস্তুত করা হয়েছে। তাঁর স্পষ্ট উল্লেখ, করোনিল কোনও ইমিউনিটি বুস্টার নয়, এটি করোনারই প্রতিষেধক। ১৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী করোনা সংক্রমিতের চিকিৎসা করা যাবে এই আয়ুর্বেদ ওষুধের সাহায্যে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বজুড়ে ১০০ র বেশি সংস্থার করোনা প্রতিষেধক তৈরির কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। যারা হিউম্যান ট্রায়ালের দৌড়ে অনেকটা এগিয়েছে, তাদের মধ্যে কয়েকটি নাম হল, অ্যাস্টাজেনেকা, ফিজার, বায়োএনটেক, জনসন অ্যান্ড জনসন, মার্ক, মডার্না, সানোফি ইত্যাদি। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে রামদেবের সংস্থা করোনা প্রতিষেধক বাজারে এনে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে।
Comments are closed.