সেই ২০১৬ সালে জেএনইউতে কানহাইয়া কুমারদের আন্দোলনের সময় থেকে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা বলে চলেছেন, এসব ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’-এর কাজ। এখন ফের জেএনইউতে পড়ুয়াদের আন্দোলন, নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ চলছে। এবারও সেই ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’-এর কথা শোনা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে তাবড় বিজেপি-র তাবড় নেতা-মন্ত্রীর মুখে।
কিন্তু কী এই গ্যাং? তাদের কাজ কী? কারা এই দলের সদস্য? তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কী ব্যবস্থা নিয়েছে বা নিচ্ছে? এসব প্রশ্নের জবাব জানতে চেয়ে আরটিআই-এ মামলা করেছেন বরিষ্ঠ সাংবাদিক সাকেত গোখেল। মামলার আবেদনে এত সব প্রশ্ন দেখে বিস্ময়ে হতবাক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কোনও কেন্দ্রীয় রিপোর্টে এমন কোনও ‘গ্যাং’ এর উল্লেখ নেই যে, যার ভিত্তিতে সাংবাদিকের তথ্যের অধিকার আইনের জবাব দেব, একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যমের কাছে এমনই মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আধিকারিক।
আবার কেউ কেউ এই আরটিআই-কে নেহাত তুচ্ছ বলে আমল দিতে চাইছেন না। তবে সাকেতও নাছোড়। তিনি বলেছেন, ২৬ জানুয়ারির মধ্যে সব জবাব না পেলে আমি চিফ ইনফর্মেশন কমিশনারের কাছে আবেদন করব।
সাকেতের কথায়, যখন অমিত শাহ থেকে কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা এমন একটি গ্যাং-এর কথা বিভিন্ন সময় উচ্চারণ করেন, তার তো একটা অস্তিত্ব আছে। তাই সে সম্পর্কে আমার জানারও অধিকার রয়েছে। হয় আমার এই আরটিআইয়ের সুস্পষ্ট জবাব দিতে হবে, নাহলে টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং আসলে শুধুই একটা কল্পনা, তা স্বীকার করতে হবে নেতা-মন্ত্রীদের। সাকেত আরটিআই-এ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছেন, টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং-এর সংজ্ঞা কী? কীভাবে বোঝা যাবে কেউ এই গ্যাং-এর সদস্য। এই গ্যাং-এর নেতা ও সদস্যদের নামও জানতে চাওয়া হয়েছে। তিনি জানতে চেয়েছেন, এই গ্যাং-এর সদস্য হলে তার বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি মামলা বা অন্য কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না। এখনও তাঁর আরটিআই-র জবাব না পেয়ে ট্যুইটারে সোচ্চারও হয়েছেন সাংবাদিক সাকেত গোখলে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার, শেহলা রশিদ প্রমুখের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই সময় থেকে বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’ শব্দবন্ধ দিয়ে একাধিক ইস্যুতে বিরোধীদের আক্রমণ করেন। সম্প্রতি জেএনইউ হামলার পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের নিন্দা করা হয় ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’-এর পাশে দাঁড়ানোর জন্য।
Comments are closed.