কোভিড রিলিফ ফান্ডে ২৫ লক্ষ টাকা সাহায্য করে ‘আর্থিক’ কারণে বন্ধ হয়ে গেল সকাল টাইমস! ছাঁটাই প্রায় ৬০ কর্মী
অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপের কারণ দেখিয়ে বন্ধ হয়ে গেল মহারাষ্ট্রের জনপ্রিয় ইংরেজি সংবাদপত্র সকাল টাইমস। রাতারাতি বেকার হয়ে গেলেন ৫০-৬০ জন কর্মী। এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের পরিবার এই সংবাদপত্র গোষ্ঠীটি চালায়। কার্যত বিনা নোটিসে এভাবে কাগজ বন্ধ করে দেওয়ার পর কাজ হারানো সংবাদকর্মীরা শরদ পাওয়ারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
একমাত্র চাকরি বেঁচে গিয়েছে সম্পাদক মাধব গোখলের। তিনি সকাল মারাঠি থেকে সকাল টাইমসে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁকে আবার সকাল মারাঠিতে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সকাল টাইমসের ওয়েব টিমকে রেখে দেওয়া হয়েছে। সেই টিমে দু’জন কর্মী খবর আপলোড করেন এবং ৪ জন ওয়েবসাইটের জন্য লেখেন। এপ্রিলেই তাঁদের নেওয়া হয়েছিল।
Newslaundry তে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, ২৬ মে সকাল টাইমসের কর্মীরা সম্পাদক গোখলের আপ্ত সহায়কের থেকে ফোন পান। প্রত্যেককে পরের দিন, অর্থাৎ ২৭ তারিখ পুণের শিবাজি নগরে সকাল টাইমসের হেড অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। সেই মিটিংয়ে কর্মীদের ৩ টি জিনিস বলা হয়। প্রথমত, সংবাদপত্রটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, সমস্ত কর্মীকে ইস্তফা দিতে বলা হচ্ছে এবং তৃতীয়ত, সবাই এক মাসের বেতন পাবেন।
Newslaundry র প্রতিবেদন বলছে, এক মাসের বেতন নিয়ে কর্মীরা আপত্তি জানান। কর্মীদের দাবি ছিল অন্তত ৩ মাসের বেতন দিতে হবে। কিন্তু বিস্তর কথা চালাচালির পরও কর্তৃপক্ষ এক মাসের বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্তেই অনড় ছিল।
মার্চেই একবার সকাল টাইমসে কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। কর্মীদের বেতনও অর্ধেক করে দেওয়া হয়েছিল। কর্মীরা ভেবেছিলেন এবার অন্তত তাঁরা নিরাপদ। কিন্তু রাতারাতি বেকার হয়ে গেলেন তাঁরা।
শরদ পাওয়ারের ভাই প্রতাপ পাওয়ার সকাল টাইমস গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান। তাঁর ছেলে অভিজিৎ পাওয়ার গ্রুপ ম্যানেজিং এডিটর। কয়েক মাস আগেই করোনা তহবিলে ২৫ লক্ষ টাকা দিয়েছে সকাল গোষ্ঠী। আচমকা চাকরি হারানো কর্মীদের বক্তব্য, কোভিড ১৯ এর বিরুদ্ধে লড়তে যে সংস্থা ২৫ লক্ষ টাকা অনুদান দেয়, তারা কীভাবে রাতারাতি সংস্থাই বন্ধ করে দিতে পারে! কার্যত একইভাবে পিএম কেয়ার্স ফান্ডে বিপুল অর্থ সাহায্যের পর কর্মী ছাঁটাই করেছিল ইন্ডিয়া বুলসও।
তবে শুধু সকাল টাইমসই নয়, করোনা পরিস্থিতিতে খারাপ অর্থনৈতিক অবস্থার কথা বলে গত ৩ মাসে টাইমস অফ ইন্ডিয়া গোষ্ঠী, হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য টেলিগ্রাফ, আনন্দবাজার পত্রিকা, দ্য হিন্দু এবং এনডিটিভিতে ছাঁটাই কিংবা কর্মীদের বেতন কমিয়ে দিয়েছে। নিউজ পোর্টাল ক্যুইন্ট কর্মীদের বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠিয়েছে।
এবার একেবারে বন্ধ হয়ে গেল মহারাষ্ট্রের অন্যতম জনপ্রিয় ইংরেজি দৈনিক সকাল টাইমস।
Comments are closed.