ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে ইসরোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিজ্ঞানে ব্যর্থতা বলে কিছু হয় না। কিন্তু তাঁর গুরু হাজির করলেন এক সম্পূর্ণ নতুন তথ্য। নরেন্দ্র মোদী যাঁকে গুরু মানেন, সেই প্রাক্তন আরএসএস নেতা সম্ভাজি ভিডে বললেন, ৩৮ বার বিফল হওয়ার পর আমেরিকা ভারতীয় সময় গণনার পদ্ধতি অনুসরণ করে এবং ৩৯ নম্বর চেষ্টায় সফল হয় তাঁরা। ক্যালেন্ডারে দিনটি ছিল একাদশী।
সোমবার মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে একটি সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন মহারাষ্ট্র শিব প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্থান নামে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের প্রধান সম্ভাজি। সেখানেই তিনি এই তত্ত্ব খাঁড়া করেন। সম্ভাজি বলেন, আমেরিকা ৩৮ বার চেষ্টা করার পর শেষপর্যন্ত ৩৯ তম বারে অন্তরীক্ষযান সফলভাবে চাঁদে পাঠাতে সক্ষম হয়েছিল। কারণ মার্কিন মুলুকের ৩৯ তম চন্দ্রাভিযান শুরু হয়েছিল একাদশী তিথিতে। আর তাতেই বাজিমাত।
কিন্তু কীভাবে হল এমনটা! প্রাক্তন সঙ্ঘ নেতা সম্ভাজি তারও হদিশ দিয়েছেন। ভিমা কোরেগাঁও হিংসায় অভিযুক্ত এই কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতার দাবি, বার বার বিফল হওয়ার পর আমেরিকার বিজ্ঞানীদের মনোবল তলানিতে ঠেকেছিল। ঠিক সেই সময় তাঁদেরই এক বিজ্ঞানী ভারতীয় কাল গণনা পদ্ধতি ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। তারপর আমেরিকা ভারতীয় কাল গণনা পদ্ধতি অনুসরণ করে একাদশী তিথিতে তাঁদের ৩৯ তম অন্তরীক্ষ অভিযান শুরু করে। আর তাতেই সাফল্য আসে।
এমন আলটপকা মন্তব্য অবশ্য সম্ভাজির কাছে নতুন কোনও ব্যাপার নয়। প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই ব্যক্তি একবার বলেছিলেন, তাঁর বাগানের আম খেয়ে নাকি অনেক দম্পতির পুত্র সন্তানের আকাঙ্খা পূরণ হয়েছে।
২০১৪ সালে নির্বাচনী প্রচারে এই সম্ভাজি ভিডেকেই নিজের গুরু বলে দাবি করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন সম্ভাজির।
২০১৮ সালের ১ লা জানুয়ারি ভিমা কোরেগাঁওয়ে দলিতদের বিশাল সমাবেশে হিংসার ঘটনা ঘটে। সেখানে হিংসায় মদত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে সম্ভাজির সংগঠন শিব প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্থান এবং মিলিন্দ একবোটের হিন্দু একতার বিরুদ্ধে। এই মর্মে পুণের থানায় মামলাও দায়ের করা হয়।
এদিকে সম্ভাজির এমন মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়ে গিয়েছে প্রবল ট্রোলিং। সম্ভাজির এই মন্তব্যের পর অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, তাহলে কি তিথি-নক্ষত্র না দেখে চাঁদের পথে রওনা দিয়েছিল বলেই বিক্রমের আজ এই হাল? স্বাভাবিকভাবেই ইসরো এই মন্তব্য নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
Comments are closed.