বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা নোভার্টিসের হেড কোয়ার্টারে চাকরি পেয়েছিলেন। যেতে হত সুইজারল্যান্ডে। কিন্তু সে পথে হাঁটলেন না। বিদেশি সংস্থার লোভনীয় চাকরি ছেড়ে বেছে নিলেন কিনা মেঠো রাজনীতি! লাল ঝাণ্ডা কাঁধে সোনারপুর দক্ষিণে প্রচার সারছেন সিপিআইয়ের তরুণ মুখ শুভম ব্যানার্জি। প্রচারের ফাঁকেই কথা বললেন The Bengal Story এর সঙ্গে।
স্কটিশচার্চ কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, সেখানেই ছাত্র রাজনীতিতে হাতে খড়ি। বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ থেকে এমএসসি। বর্তমানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো।বহুজাতিক সংস্থার চাকরি ছেড়ে সটান রাজনীতিতে, তাও এরকম একটা সময়ে, কেন? দেখুন কথাটা ক্লিশে হলেও শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছে থেকেই রাজনীতিতে আসা, এছাড়া আর কোনও কারণ নেই, বলছেন শুভম।
আরও পড়ুন: ‘হারের ভয়ে দিশেহারা মমতা’, বলছেন জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী শুভেন্দু
বামপন্থী পরিবারে বড় হয়ে ওঠা। দাদু, ঠাকুমা ছিলেন হাওড়া জেলার বামপন্থী রাজনীতির প্রথম দিকের সংগঠক। তাঁদের মুখে ৪৩ এর দুর্ভিক্ষ, ৪৬ এর দাঙ্গাতে বামপন্থীদের ভূমিকার গল্প শুনে বড় হয়েছেন। প্রার্থী জানালেন, বামপন্থী রাজনীতি করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। বর্তমানে শুভম AISF এর জাতীয় সভাপতি। সিপিআই ন্যাশনাল কাউন্সিলের সদস্য।
ভোটের ময়দানে প্রথমবার হলেও অভিজ্ঞ রাজনীতিকের মত বিপক্ষকে তীব্র কটাক্ষে বিঁধতে পিছিয়ে নেই বাম ছাত্র নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল, বিজেপি দু’দলেরই তারকা প্রার্থী। ঘাসফুল প্রতীকে লড়ছেন বাংলা সিরিয়ালের পরিচিত মুখ লাভলী মৈত্র। বিজেপির প্রার্থী আরেক অভিনেতা অঞ্জনা বসু।
বিপরীতে দু’জন পরিচিত মুখ। তাও জয়ের আশা করেন?
দেখুন আমার ২০ দিন প্রচার হয়ে গেল। সকাল বিকেল মিলে আট ঘন্টা রাস্তায় কাটছে। একদিনও তৃণমূল-বিজেপির কোনও প্রার্থী, কর্মীকে দেখতে পেলাম না। শুভমের টিপ্পনি, ওঁরা নিজেদের মধ্যেই ঝগড়ায় ব্যস্ত। বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীরাই রাস্তা অবরোধ করছেন, কোথাও শুনেছেন?
২০১৯ এ রাজ্যে বাম ভোট তলানিতে। কী মনে হয়, মানুষ কেন মুখ ফিরিয়ে নিল আপনাদের থেকে? লোকসভা ভোটের কোনও প্রভাব বিধানসভায় পড়বে না। সিপিআইয়ের তরুণ প্রার্থীর স্বীকারোক্তি, দেখুন সে সময়ে দেশে নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প হিসেবে বিরোধীরা কোনও মুখ দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে পারেনি। কিন্তু মাঝে পরিস্থিতির ব্যাপক বদল হয়েছে।
জানালেন, নির্বাচনে জিতলে সবার প্রথম সোনারপুর দক্ষিণের পানীয় জলের সমস্যা দূর করার জন্য কাজ করবেন। শুভম বিশ্বাস করেন, একজন বিধায়ক তহবিলে যে পরিমান টাকা পান তাতে একটি বিধানসভা কেন্দ্রের আমূল পরিবর্তন করা যায়। তাঁর অভিযোগ, সোনারপুর দক্ষিণে তৃণমূল বিধায়কের পাঁচ বছরে কাজের খতিয়ান শূন্য।
দুপুরের সাময়িক বিশ্রামের পর ফের প্রচারে। সংযুক্ত মোর্চার জয় নিয়ে কতটা নিশ্চিত? কিছুক্ষন সময় নিয়ে তরুণ গবেষকের উত্তর, দেখুন তৃণমূল দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে ওরা ক্ষমতায় আসছে না। আর আমার বিশ্বাস বাংলার মানুষ কখনোই বিজেপিকে ক্ষমতায় আসতে দেবেন না। বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে বিজেপির আদর্শের কোনও সম্পর্ক নেই। তাই বাংলার মানুষের কাছে একমাত্র বিকল্প সংযুক্ত মোর্চা।
Comments are closed.