যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত সুহেল শেঠকে সাহিত্য আলোচনায় অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর ঘটনা ঘিরে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়ায়। জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ সুহেল শেঠের বিরুদ্ধে একাধিক মহিলা যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু গোল বেধেছে ইঙ্কপট ইন্ডিয়া কনক্লেভের অতিথি তালিকা নিয়ে। আলোচনার বিষয় ‘সাহিত্যের মশাল বাহকদের ব্রহ্মান্ড’। সেই আলোচনায় অতিথি তালিকায় জ্বলজ্বল করছে সুহেল শেঠের নাম। তা নিয়েই তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া।
প্রবল সমালোচনার মুখে মঙ্গলবার অতিথি তালিকা থেকে সুহেল শেঠকে বাদ দেয় ইঙ্কপট ইন্ডিয়া। তবে কারণ হিসেবে সমালোচনার ঝড় নয় বরং দেখানো হয়, সুহেল শেঠের অন্য কাজে ব্যস্ত থাকাকে।
অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে সুহেল শেঠের নাম ঘোষণার পরই তা নিয়ে প্রবল সমালোচনা শুরু হয়। যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত সুহেলকে কীভাবে এমন একটি অনুষ্ঠানের বক্তা হিসেবে নির্বাচন করল কর্তৃপক্ষ, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নেটিজেনরা।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি মাত্র ঘটনায় সুহেল শেঠ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে বাকি কোনও ঘটনা নিয়েই তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
তবে শুধুমাত্র মিটুর ঘটনাই নয়, সাহিত্য নিয়ে আলোচনায় সুহেল শেঠকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হল, তা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছেন নেটিজেনরা। তাঁদের বক্তব্য, সুহেল শেঠ জীবনে এমন কী সাহিত্য মূল্য সম্পন্ন লেখা লিখেছেন, তা অজানা। এমন কোনও বইও নেই তাঁর নামে। তাহলে সাহিত্যের মশাল বাহকদের নিয়ে তিনি কীভাবে বলবেন? আগামী ১৮ ই নভেম্বর দিল্লিতে অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা।
২০১১ সালে সাংবাদিক মন্দাকিনী গেহলতকে জোর করে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ রয়েছে সুহেল শেঠের বিরুদ্ধে। এছাড়াও চিত্র পরিচালক নাতাশা রাঠোরও সুহেলের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন। সংবাদমাধ্যমের বিখ্যাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ অবশ্য বিরল নয়। এর আগে যৌন হেনস্থার অভিযোগে প্রাক্তন সাংবাদিক তথা বিজেপি নেতা এম জে আকবরকে মন্ত্রী পদ অবধি ছাড়তে হয়। বাংলার আনন্দবাজার পত্রিকাতেও চিফ রিপোর্টারের বিরুদ্ধে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছিলেন সেই সংস্থার প্রাক্তন কর্মীরা। এবিষয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার তৎকালীন সম্পাদক অভীক সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল thebengalstory।
এই প্রেক্ষিতেই সোশ্যাল মিডিয়ার প্রশ্ন, সুহেল শেঠকে বক্তাদের তালিকায় দেখেও কেন শশী থারুর, করণ সিংহ, উইলিয়াম ডালরিম্পল কিংবা সাংবাদিক তভলিন সিংহ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে রাজি হলেন?
এই বিতর্ক শুরু হতেই অবশ্য শশী থারুর এবং উইলিয়াম ডালরিম্পল নিজেদের অনুষ্ঠান থেকে সরিয়ে নেন। ট্যুইটারে ডালরিম্পল জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানের সময় তিনি মুম্বইতে থাকবেন। কিন্তু অতিথি বক্তা হিসেবে সুহেল শেঠকে ডাকা নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্যে রাজি হননি। শশী থারুর জানিয়েছেন, তিনি কনক্লেভে আসতে পারছেন না কারণ সেই সময় তাঁকে পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী দুবাইয়ে থাকতে হবে। তিনি জানিয়েছেন, উদ্যোক্তারা তাঁর সঙ্গে কথা বলার আগেই তাঁর নাম এবং ছবি প্রকাশ করে দিয়েছিল। তাতেই বিভ্রান্তি।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, পূর্বনির্ধারিত ব্যস্ততা না থাকলে শশী থারুর কিংবা উইলিয়াম ডালরিম্পল কি সুহেল শেঠের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নিতে রাজি হতেন?
Comments are closed.