স্বাধীনতার ৭০ বছর পরও দেশে অস্পৃশ্যতা রয়েছে, ম্যানহোলে সাফাই কর্মীদের মৃত্যু নিয়ে বলল সুপ্রিম কোর্ট

বিশ্বের কোথাও মানুষকে মরার জন্য গ্যাস চেম্বারে পাঠানো হয় না। ম্যানহোল বা নর্দ্মা পরিষ্কারের কাজ করতে গিয়ে সাফাইকর্মীদের মৃত্যুর ঘটনায় তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের নানা প্রান্তে ম্যানহোল বা নর্দমা পরিষ্কার করতে গিয়ে মৃত্যু হয় সাফাইকর্মীর। প্রতি মাসেই এই সংখ্যাটা প্রায় ৪ থেকে ৫ জন।
এই প্রেক্ষিতে বুধবার সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও ভারতে জাতপাতের বিদ্বেষ বহাল তবিয়তে রয়েছে। কোনও নিরাপত্তা ছাড়া নর্দমা সাফাইয়ের জন্য বিশ্বের আর কোনও দেশে মানুষকে কি কাজে পাঠানো হয়?
বুধবার এসসি,এসটি অ্যাক্ট সংক্রান্ত একটি শুনানিতে কেন্দ্রের তরফে শীর্ষ আদালতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগোপাল। তাঁর কাছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চের প্রশ্ন, কেন অক্সিজেন সিলিন্ডার, মাস্ক বা অন্যান্য নিরাপত্তাজনিত ব্যবস্থা ছাড়াই সাফাই কর্মীদের কাজ করতে হয়? কেন সরকারের তরফে কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয় না? সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্র, এমআর শাহ ও বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, প্রতি মাসেই অন্তত ৫ টা করে খবর পাওয়া যায় যে, ম্যানহোল বা নালা সাফ করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে সাফাই কর্মীর। বিশ্বের আর কোনও দেশে মানুষকে গ্যাস চেম্বারে মরতে পাঠানো হয় না বলে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগোপাল বলেন, যে সুপারভাইজারি অফিসার বা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ ধরণের কাজ হয়, তাদের দায়বদ্ধ থাকা উচিত।
এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আরও পর্যবেক্ষণ, মানুষের প্রতি সবচেয়ে অমানবিক আচরণ দেখা যায় এই ক্ষেত্রে। দেশের সংবিধান সমস্ত নাগরিককে সমান অধিকার দেওয়া সত্ত্বেও অনেকেই এই অধিকার থেকে বঞ্চিত। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেন, স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও দেশে অস্পৃশ্যতা রয়েছে। যাঁরা নালা পরিষ্কারের মতো কাজ করেন কেউ কি তাঁদের সঙ্গে হাত মেলান? প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের।

Comments are closed.