‘অভিযোগ যখন দুর্নীতির, জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে সরকার কি তা এড়িয়ে যেতে পারে?’ রাফাল মামলায় কেন্দ্রকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের

বুধবার রাফাল মামলার শুনানি চলাকালীন, অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপাল সুপ্রিম কোর্টে জানান, রাফাল চুক্তি সম্পর্কিত গোপনীয় নথি প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে চুরি গিয়েছে এবং ওই গোপনীয় নথির ওপর ভিত্তি করে মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। এরপরই বিচারপতি কে এম জোসেফ বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ চাপা দেওয়া উচিত নয়। বিচারপতি আরও বলেন, ওই ‘চুরি’ যাওয়া তথ্যও খতিয়ে দেখার অধিকার আছে আদালতের।
রাফাল চুক্তি সম্পর্কিত নথি চুরি করা হয়েছে এবং সেই নথি প্রমাণ হিসেবে আদালতে দাখিল করে আবেদনকারীরা সরকারি গোপন তথ্য সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করেছেন বলে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে দাবি করে কেন্দ্র। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে এই নথি চুরি করা হয়েছে। আর চুরিতে সাহায্য করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকেরই প্রাক্তন অথবা বর্তমান কর্মচারীদের কেউ কেউ। পরে সেই তথ্য সংবাদমাধ্যমের হাতে চলে যায়। এই ‘গোপন’ নথির ওপর ভিত্তি করে রাফাল মামলার রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশোবন্ত সিনহা, অরুণ শৌরি এবং আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। কিন্তু এই চুরি যাওয়া গোপন নথি দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে কোনওভাবেই প্রকাশ্যে আনা উচিত নয় বলে আদালতে পাল্টা সওয়াল করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করে, যাঁদের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ, সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে? এর উত্তরে সরকার পক্ষ জানায়, অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে। রাফাল ছাড়া কীভাবে পাকিস্তানের এফ-১৬-এর জবাব দেওয়া যাবে দেশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা যাবে, সেই প্রশ্ন তোলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। দ্রুত রাফাল বিমান ভারতে আনার পরিবর্তে, উল্টে কেন্দ্রকে আক্রমণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গত ১৪ ডিসেম্বর রাফাল মামলায় কেন্দ্রকে ক্লিনচিট দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।  কিছুদিন আগেই ‘দ্য হিন্দু’ সংবাদপত্রে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয় রাফাল যুদ্ধবিমান চুক্তিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী দফতরও সমান্তরালভাবে আলোচনা চালিয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে দুটি সরকারি নোটও প্রকাশ্যে আনা হয়, যা নতুন করে উসকে দেয় রাফাল বিতর্ক। এই তথ্যগুলির ওপর ভিত্তি করে সুপ্রিম কোর্টে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুন শৌরি, যশোবন্ত সিনহা ও আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ এনে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিলেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৪ মার্চ।

Comments are closed.