‘আনন্দবাজার ভারত বিরোধী’, তৃণমূল, সিপিএমের পর এবার তথাগত রায়ের নিশানায় বাংলার সর্বাধিক বিক্রিত দৈনিক!
বাংলার বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই কেন রাজ্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠছেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়, তা নিয়েই এখন জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। মেঘালয়ের রাজ্যপালের চেয়ারে বসে বাংলা এবং বাংলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে খেলা পর্যন্ত, বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর মন্তব্য ইতিমধ্যেই বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। মুখ্যমন্ত্রী, বাঙালি তরুণী, ইস্টবেঙ্গল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, জয় বাংলা স্লোগান, জিয়াগঞ্জে জিহাদি তত্ত্বের পর এবার বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়ের রোষে বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা।
তথাগত রায়ের আপত্তির শুরুটা ৩১ শে অক্টোবর আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সাবির ইবন ইউসুফের ‘লজ্জা হওয়া উচিত! পিকনিকে এসেছেন’ শীর্ষক প্রতিবেদন নিয়ে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টা নাগাদ মেঘালয়ের রাজ্যপালের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহদের পূর্বসূরী তথাগত রায় আনন্দবাজার পত্রিকাকে ‘নির্লজ্জভাবে ভারত বিরোধী’ আখ্যা দেন। এবং লেখেন, ১০,৮৬৬ দিনের লকডাউন এখনও বাকি!
একই দিনে তথাগত ফের আনন্দবাজার পত্রিকার একটি প্রতিবেদন নিয়ে তির্যক প্রশ্ন তোলেন। কেন ভাগীরথীর পশ্চিম তীরের মানুষ ঢাকাই ভাষায় কথা বলছেন, তা নিয়ে অবাক মেঘালয়ের রাজ্যপাল!
এখানেই থামেননি মেঘালয়ের রাজ্যপাল। শুক্রবার সকালে ফের আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন নিয়ে সরাসরি সংবাদপত্রটিকে ইসলামাবাদের বলে দাবি করতে গিয়ে কলকাতার সঙ্গে তুলনা করেন।
এরপর রাজ্যপাল তথাগতর নজরে আসে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ছবি এবং তার বিষয়বস্তু। বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়ের দাবি, ৩ লক্ষ কাশ্মীরি পণ্ডিত ডোমিসাইল সার্টিফিকেট নিয়ে পথে বসে ছিল। সেই সম্বন্ধে আনন্দবাজার পত্রিকা কেন চুপচাপ, প্রশ্ন মেঘালয়ের সাংবিধানিক প্রধানের।
তবে এই ট্যুইট করে তথাগত রায়কে কটাক্ষের মুখেও পড়তে হয়েছে। সম্প্রতি মেঘালয়ে ঘটা একটি দুর্ঘটনার ছবি এবং সংবাদসংস্থার রিপোর্ট তুলে ধরে একজন কমেন্ট করেছেন, মেঘালয়ের রাজ্যপাল যখন বাংলার রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্যে ব্যস্ত, তখন তাঁরই কর্মস্থলের কাছে পথ দুর্ঘটনায় এক সাধারণ মানুষের মৃত্যু হল, আহত হলেন ২১ জন বিএসএফ জওয়ান। কই, তথাগতবাবুর কোনও ট্যুইটেই তো তা নিয়ে কোনও বক্তব্য দেখলাম না।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ব্যাখ্যা, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির চমকপ্রদ ফলের পর হঠাৎই তথাগত রায় রাজ্যের
প্রায় সমস্ত বিষয় নিয়েই সক্রিয় মতামত দিচ্ছেন। কেন রাজ্যপালের চেয়ারে বসে অন্য রাজ্যের রাজনৈতিক বিষয়ে তাঁর এই অংশগ্রহণ তাও আলোচনার নতুন পরিসর তৈরি করেছে। বিশেষ করে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতির এই ভূমিকার মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ সমীকরণ খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই।
Comments are closed.