প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্থাৎ বিভিন্ন ডিগ্রির নম্বর আর বিবেচনায় আনা হবে না। কাউন্সেলিং ছাড়া শুধুমাত্র লিখিত পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতেই স্কুলশিক্ষক নিয়োগের প্যানেল তৈরি হবে। আপার প্রাইমারি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সব স্তরে শিক্ষক নিয়োগে আমূল পরিবর্তন আনছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি কলকাতা গেজেটে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এমনই তথ্য দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দফতর।
নয়া বিজ্ঞপ্তিতে বেশ কিছু নতুন নিয়মের কথা বলা হয়েছে। আগে আপার প্রাইমারি বা উচ্চ প্রাথমিক থেকে শুরু করে নবম-দশম শ্রেণি ও উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষকতা করার জন্য তিনটি আলাদা পরীক্ষা দিতে হত। তার বদলে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরিখে যে কোনও স্তর অথবা সব স্তরের জন্য একটি ধাপেই পরীক্ষা দিলেই চলবে। এই লিখিত পরীক্ষা হবে দুটি ধাপে। এর মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এবার থেকে ইন্টারভিউ ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হচ্ছে এবং প্রার্থীর ডিগ্রির নম্বরও আর বিবেচিত হবে না।
এতদিন রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষায় সফল প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার নথিপত্র যাচাই করা হত। তার ভিত্তিতে একটি মেধা তালিকা তৈরি হত। সেই তালিকার উপর ভিত্তি করে প্রার্থীদের কাউন্সেলিং-এ ডাকা হত। সেখানে নিজেদের পছন্দের স্কুল বাছার সুযোগও থাকত। কিন্তু এই পুরো পদ্ধতি শেষ করতে এক বছরের বেশি সময় লেগে যায় এবং কাউন্সেলিং-এর সময়েও নানাবিধ জটিলতা তৈরি হচ্ছিল। সেখান থেকে সমাধান খুঁজতেই এই নয়া বিজ্ঞপ্তি বলে দাবি শিক্ষা দফতরের।
সূত্রের খবর, শিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-কে বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে শূন্য পদ কত তা জানাবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এখন থেকে সব চাকরিপ্রার্থীর উত্তরপত্র তিন বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করবে এসএসসি।
এদিকে কেন প্রার্থীদের ডিগ্রির নম্বর প্যানেল তৈরির সময় বিবেচিত হবে না সেই প্রশ্ন তুলছে কয়েকটি শিক্ষক সংগঠন। তাদের কথায়, শুধুমাত্র লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে প্যানেল প্রকাশ করার ব্যাপারটি খুবই ভালো। এতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসবে। কিন্তু প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বা ডিগ্রির নম্বরটা কেন বাদ দেওয়া হল? কারও কারও মত, শুধুমাত্র ইন্টারভিউ ব্যবস্থা তুলে দিলেই শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসবে না। লিখিত পরীক্ষা শুধুমাত্র অনলাইনে নেওয়া হোক এবং ডিগ্রির নম্বরও বিবেচিত হোক। তবেই স্বচ্ছতা আসবে।
Comments are closed.