প্রায় ৫০ হাজার পরিবহণ কর্মীকে তেলেঙ্গানা সরকারের বরখাস্তের হুঁশিয়ারির পরও আন্দোলনে বিভিন্ন ইউনিয়ন

বুধবার পঞ্চম দিনে পড়ল তেলেঙ্গানার বাস ইউনিয়নগুলির ডাকা ধর্মঘট। কিন্তু সমস্যা মেটার নামগন্ধ নেই। তেলেঙ্গানার কেসিআর সরকার বনাম টিএসআরটিসি দ্বৈরথে প্রবল সমস্যায় সাধারণ মানুষ।
তেলেঙ্গানা সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার ও প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারার অভিযোগে গত ৫ ই অক্টোবর থেকে তেলেঙ্গানার গাড়ি সংগঠনগুলি অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডাকে। এদিকে বনধ মোকাবিলায় আগ্রাসী মনোভাব নেয় কে চন্দ্রশেখর রাও সরকার। গত ৪ দিন ধরে বনধ মোকাবিলায় তেলেঙ্গানা স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের (টিএসআরটিসি) নেতাদের হুঁশিয়ারি দেয় রাজ্য। প্রথমে আরটিসি স্টাফদের বিরুদ্ধে এসেনশিয়াল সার্ভিসেস মেন্টেনেন্স অ্যাক্টে মামলার হুমকি, তারপরেও কাজ না হওয়ায় প্রায় ৫০ হাজার আরটিসি কর্মীকে ছাঁটাইয়ের হুঁশিয়ারি দেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। তাতেও আন্দোলনকারীদের টলানো যায়নি। বরং কংগ্রেস ও বিজেপির মতো রাজনৈতিক দলগুলির সমর্থন পেয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আরও জোরালো আন্দোলনের পথে টিএসআরটিসি।
লোকসানে চলা অন্ধ্র প্রদেশ স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের (এপিএসআরটিসি) ৫২ হাজার কর্মীকে সরকারি কর্মচারীর মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি। প্রতিবেশী রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের পর মাথাব্যথা বাড়ে তেলেঙ্গানা সরকারের। যে বাস ও গাড়ি সংগঠনগুলি সে রাজ্যের শাসক দল টিআরএসের ঘনিষ্ঠ, তারাও কেসিআর সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যোগদান করে। সংগঠনগুলির দাবি, আরটিসিতে থাকা ৫০ হাজার অস্থায়ী কর্মীকে নিরাপত্তা দিতে হবে এবং সরকারের সঙ্গে আরটিসিকে সংযুক্ত করতে হবে। তাঁদের অভিযোগ, ভোটের আগে টিএসআরটিসি কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারে বেতনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা পূরণ করেনি কেসিআর সরকার। সব মিলিয়ে ২৬ টি দাবি নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয় সংগঠনগুলি। এদিকে বনধের প্রতিক্রিয়ায় টিএসআরটিসির ৫০ হাজার কর্মীকে ছাঁটাইয়ের হুঁশিয়ারি দেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী। গত শনিবার সন্ধে ৬ টার মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় কর্মীদের। সূত্রের খবর, এই নির্দেশিকার পর দেখা যায়, রবিবার মাত্র ১,২০০ জন আরটিসি কর্মী কাজে যোগ দিয়েছেন। আর এরপরেই ‘কর্মখালি’ পোস্ট পূরণের উদ্যোগ নেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী। ফলত আরও তীব্র হয় আন্দোলন। সরাসরি সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় আরটিসি কর্মীরা। আরটিসি ইউনিয়নের একাধিক নেতাকে আটক করে পুলিশ। টিএসআরটিসি চেয়ারম্যান অশ্বথামা রেড্ডির কথায়, রবিবার পর্যন্ত তাঁরা টিএসআরটিসির স্বার্থরক্ষায় লড়াই করছিলেন। কিন্তু এবার গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই শুরু হবে।

Comments are closed.