৬০ এর দশক। বাংলা চল্লচিত্রে তখন স্বর্ণযুগের সূচনা। দর্শক মহলকে একের পর এক হিট ছবি উপহার দিচ্ছিলেন উত্তম-সুচিত্রার জুটি। থেমে নেই সুপ্রিয়া দেবী, সৌমিত্র চ্যাটার্জি, সাবিত্রী চ্যাটার্জির মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও।
একটা ছবি হিট হওয়ার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান চরিত্রের চরিত্রায়ণ। সেদিক থেকে বিচার করলে কিছু চরিত্রের অবদান আজও অনস্বীকার্য। প্রথমেই যার নাম করতে হবে তিনি হলেন, মহানায়ক উত্তম কুমার।
উত্তম কুমার আজও বাঙালির মনে সদা বিরাজমান। তৎকালীন সময় শুধু দর্শক মণ্ডলীর কাছেই জনপ্রিয় ও আকর্ষণী পুরুষ ছিলেন না তিনি। বহু সহকর্মীর গোপন প্রেমও ছিলেন বটে। যাঁদের মধ্যে একজন সাবিত্রী চ্যাটার্জী। অভিনয়ের সূত্রেই উত্তম কুমারের সঙ্গে তাঁর আলাপ। প্রথম ছবিতে অভিনয় করার পরই ভালোবেসে ফেলেছিলেন উত্তম কুমারকে।
বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম সর্বাধুনিক অভিনেত্রী হলেন সাবিত্রী চ্যাটার্জী। অভিনেত্রী বাংলাদেশের কুমিল্লার কমলাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন তাঁর বাবা-মায়ের সবচেয়ে কনিষ্ঠতম সন্তান। ভারত-বাংলাদেশ ভাগ হওয়ার পর বাংলাদেশ ছেড়ে পরিবার সহ কলকাতায় তাঁর দিদির বাড়িতে এসে ওঠেন। অভাবের সংসারে হাল ধরার কোন উপায় না পেয়ে অবশেষে অভিনয় জগতে পা রাখেন। অভিনেতা ভানু ব্যানার্জির হাত ধরেই প্রথম সিনেমা জগতে প্রবেশ। ‘নতুন ইহুদি’ নাটকের মাধ্যমে সাবিত্রী দেবীর অভিনয় জগতে আত্মপ্রকাশ।
১৯৫১ সালে ‘সহযাত্রী’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে প্রথম বড় পর্দার প্রবেশ সাবিত্রী চ্যাটার্জির। প্রথম ছবিতেই তিনি মহানায়কের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেন। প্রথম দেখাতেই মন দিয়ে ফেলেছিলেন সাবিত্রী। এরপর উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে একে একে রাতভোর, নিশিপদ্ম, ধন্যি মেয়ের মতো হিট ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছিলেন।
এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী সাবিত্রী দেবী বলেছিলেন, প্রেম হয়তো খানিকটা ছিল। কিন্তু তাঁর থেকেও বেশিটা রটানো হয়েছিল। এমনকি এও নাকি রটানো হয়েছিল মহানায়ক আর সাবিত্রীদেবী একে ওপরকে বিয়ে করে বালিগঞ্জে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। যদিও এইরকম কিছুই ঘটেনি বলে জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
সময় কেটেছে, সাবিত্রী দেবীর বয়সও বেড়েছে। বর্তমানে তাঁকে রুপোলি পর্দায় কম বেশি দেখা গেলেও অভিনয় জগতের সাবিত্রী পর্ব অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল।
Comments are closed.