কে অশোক লাভাসা, যিনি মোদী-অমিত শাহকে কমিশনের ক্লিন চিট দেওয়ার প্রতিটি সিদ্ধান্তেই বিরোধিতা করেছেন

বিরোধীদের দায়ের করা একাধিক বিধিভঙ্গের অভিযোগে একের পর এক ক্লিন চিট পেয়ে চলেছেন মোদী-অমিত শাহ। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে। এই প্রেক্ষিতেই সামনে এসেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। বিরোধীদের তরফে যে পাঁচটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, তার মধ্যে চারটি অভিযোগই করা হয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে। এই পাঁচটি অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে বসে বাকি দুজন কমিশনারের থেকে ভিন্ন মত পোষন করেছেন নির্বাচন কমিশনার অশোক লাভাসা।

সর্বশেষ খবর, গত ২১ শে এপ্রিল গুজরাতের পাটনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভাষণে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়নি বলে জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই ভাষণে মোদী দাবি করেছিলেন, বায়ুসেনার পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে ছাড়তে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ওঁকে না ছাড়লে পাকিস্তানকে তার ফল ভুগতে হবে।

অশোক লাভাসা ১ লা এপ্রিল মহারাষ্ট্রের ওয়ার্ধা এবং ৬ ই এপ্রিল নান্দেদে দেওয়া নরেন্দ্র মোদীর ভাষণকে ক্লিন চিট দেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। পাশাপাশি ৯ ই এপ্রিল লাতুর এবং চিত্রদূর্গের জনসভায় বালাকোট এয়ার স্ট্রাইকের উল্লেখ করে প্রথম ভোটারদের কাছে ভোট ভিক্ষা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কমিশনের দফতরে সেই অভিযোগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বসেও বাকি দুজন কমিশনারের মতের সঙ্গে মেলেনি অশোক লাভাসার মত। গত ৯ ই এপ্রিলই নাগপুরের জনসভায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের মন্তব্যের পর হওয়া বিধিভঙ্গের অভিযোগেও তিনি তাঁর দুই সহকর্মীর মতের সঙ্গে সহমত হতে পারেননি। এক্ষেত্রেও অমিত শাহকে ক্লিন চিটের বিরোধিতা করেছিলেন অশোক লাভাসা। ওই জনসভায় অমিত শাহ সরাসরি কেরলের ওয়েনাড় আসনের সঙ্গে পাকিস্তানের তুলনা করেছিলেন। এই আসন থেকেই ভোটে লড়েন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।

যদিও নির্বাচন কমিশন এখনও পর্যন্ত চিত্রদূর্গের জনসভা থেকে বিধিভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। অশোক লাভাসা ছাড়াও কমিশনের অন্য দুই সদস্য হলেন, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা এবং নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র।

ওপরে যতগুলি অভিযোগের কথা বলা হয়েছে, সবকটি ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত হয়েছে ২-১ ব্যবধানে। সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অশোক লাভাসার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কোনও মন্তব্যে রাজি হননি।

১৯৮০ ব্যাচের হরিয়ানা ক্যাডারের আইএএস অফিসার অশোক লাভাসা এর আগে অসামরিক বিমান মন্ত্রকের সচিব এবং পরিবেশ সচিব হিসেবে কাজ করেছেন। সামলেছেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্থ সচিবের দায়িত্বও। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির এই প্রাক্তন ছাত্র নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করেছেন। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায় আধিকারিক পদেও কাজ করেছেন অশোক লাভাসা। অস্ট্রেলিয়ার সাউদার্ন ক্রশ ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করেছেন তিনি। এছাড়াও একাধিক বই লিখেছেন ফটোগ্রাফির ভক্ত অশোক লাভাসা।

Comments are closed.