সোশ্যাল মিডিয়ার সমালোচনা করে তীব্র আক্রমণের মুখে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এমডি! সবচেয়ে বেশি ঘৃণা ছড়ায় তো টাইমস নাও, সরব নেটিজেনরা

বিশ্বজুড়ে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কয়েকটি বহুজাতিক সংস্থা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন দেবে না বলে জানিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে কোক, ইউনিলিভার, হন্ডা প্রভৃতি। তাদের মূল অভিযোগ, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে হেট স্পিচ রোখার মতো কোনও কার্যকরী নীতি নেই। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মের এই ত্রুটিকে হাতিয়ার করেই বিশ্বজুড়ে দাপাচ্ছে ফেক নিউজ আর হেট স্পিচ। তাই এই প্ল্যাটফর্মে পণ্যের বিজ্ঞাপন ভুল বার্তা দিতে পারে।
এবার সেই উদাহরণ তুলে ধরে সোশ্যাল মিডিয়াকে দোষারোপ করে সেই সোশ্যাল মিডিয়াতেই পোস্ট করলেন টাইমস অফ ইন্ডিয়া গোষ্ঠীর ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিনীত জৈন। আর টাইমস গ্রুপের এমডির সেই পোস্টে দিনভর চলল তুমুল ট্রোলিং। টাইমস নাওয়ের কর্ণধারের মুখে হেট স্পিচ ছড়াতে সোশ্যাল মিডিয়াকে গালমন্দ মোটেই মেনে নিতে পারেননি নেটিজেনরা।
রবিবার দুপুরে টাইমস গ্রুপের এমডি বিনীত জৈন প্রথম ট্যুইটে বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া এখন হিংসা, ঘৃণা এবং ফেক নিউজ ছড়ানোর কারণ হয়ে উঠেছে। সারা দুনিয়ায় বিভিন্ন সরকার গড়িমসি করে সোশ্যাল মিডিয়াকে শৃঙ্খলায় বাঁধতে ব্যর্থ হয়েছে। বিজ্ঞাপনদাতারা সরে গিয়ে বার্তা দিচ্ছেন হিংসা ছড়াতে পারে এমন কিছু কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে গাইডলাইন তৈরির। পৃথিবীটাকে আরও একটু বাসযোগ্য করে তুলতে সরকারের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

তারপরের ট্যুইটে নিজের সংবাদপত্র দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন তুলে ধরে বিনীত জৈন লেখেন, হন্ডা, ইউনি লিভার, কোকের মতো সংস্থা এই কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

টাইমস গোষ্ঠীর এমডির জোড়া ট্যুইটের উল্টো প্রতিক্রিয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নেটিজেনরা প্রকাশ্যেই বিনীত জৈনের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন, আপনার চ্যানেল টাইমস নাও যে সংবাদ পরিবেশন করে, তাকে হেটস্পিচ ও ফেক নিউজের আওতায় রাখেন তো? টাইমস নাও চ্যানেলের একটি স্ক্রিনশট পোস্ট করে এক নেটিজেন লিখেছেন, এই খবরটি হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি থেকে পাওয়া। এই অনুষ্ঠানটির স্পনসর কেন্ট। দুনিয়াকে আরও একটু বাসযোগ্য করার দায়বদ্ধতা থেকে তারা নিশ্চয়ই আপনার চ্যানেলকে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে না।

প্রসঙ্গত কয়েকদিন আগে হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হওয়া গালওয়ান সংঘর্ষে চিনের মৃত সেনার তালিকাকে সত্যি ভেবে লাইভ অনুষ্ঠানে তা পড়েন টাইমস নাও চ্যানেলের দুই মুখ নভিকা কুমার এবং রাহুল শিবশঙ্কর।
বিনয়কুমার দোকানিয়া নামে এক নেটিজেন বিনীত জৈনের পাল্টা ট্যুইটে লিখেছেন, আচ্ছা আপনাকে কেন ট্যুইট করতে হচ্ছে বলুন তো স্যার? যেখানে আপনি একটা সামান্য ইমেল, এসএমএস করে বলতে পারেন আপনারই দুই কর্মী রাহুল শিবশঙ্কর ও নভিকা কুমারকে যে, ঘৃণা ছড়ানো এবার বন্ধ করতে হবে। এই দুজনই টাইমস নাও চ্যানেলের কর্মী।

সব মিলিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার বিরোধিতা করতে সোশ্যাল মিডিয়াকে বেছে নিয়ে বেজায় বেকায়দায় পড়ে গিয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় মিডিয়া সাম্রাজ্যের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিনীত জৈন। সকলেরই প্রশ্ন, ঘৃণা ছড়ানোর প্ল্যাটফর্ম যদি সোশ্যাল মিডিয়া হয়, তাহলে আপনার টাইমস নাও কী করছে?

Comments are closed.