গত ৫ জানুয়ারি জেএনইউতে দুষ্কৃতী হামলার জন্য উপাচার্য এম জগদেশ কুমারকেই দায়ী করল কংগ্রেস। ওই ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য কংগ্রেস যে তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিল, সেই কমিটি এই রিপোর্ট দিয়েছে। মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেবের নেতৃত্ব পাঁচ সদস্যের কমিটি সুপারিশ হল, অবিলম্বে উপাচার্যকে বরখাস্ত করতে হবে। পাশাপাশি ওই কমিটি এই উপাচার্যের আমলে নিযুক্ত অনেক অধ্যাপকের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে ওই সব নিয়োগের তদন্ত দাবি করেছে।
কংগ্রেস নেত্রী রবিবার তাঁদের রিপোর্টটি প্রকাশ করেন এক সাংবাদিক বৈঠকে। তিনি বলেন, ৫ তারিখের ঘটনার পিছনে উপাচার্যের হাত ছিল। সমগ্র পরিকল্পনাটাই ছিল খোদ উপাচার্যের। গোটা আক্রমণই ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। তাঁর অভিযোগ, বেছে বেছে সঙ্ঘ বিরোধী পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের উপর হামলা করা হয়েছে। কংগ্রেসের তদন্তকারী কমিটির অভিযোগ, ২০১৬ সালে জগদেশ কুমার উপাচার্য পদে বসার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত ও অন্যান্য যোগ্যতার চেয়ে আবেদনকারীদের সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠতার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। সুস্মিতার নেতৃত্বাধীন কমিটি প্রশ্ন তুলেছে উপাচার্যের আমলে নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীদের ভূমিকা নিয়েও। সুস্মিতার অভিযোগ, উপাচার্যের নিয়োগ করা নিরাপত্তা সংস্থার যোগসাজশেই ওই দিন পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর পরিকল্পনামাফিক হামলা করা হয়েছে। হামলার প্রমাণ লোপাট করার জন্যই আগে থেকে সিসি টিভি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল এবং বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কমিটি উপাচার্য এবং দিল্লি পুলিশের কর্তাদের বয়ানের ভিতরও অসংখ্য অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে। কমিটির সদস্যরা জানান, তাঁরা কথা বলার জন্য উপাচার্যের সঙ্গে বহুবার যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু তিনি সময় দেননি। সুস্মিতা বলেন, সত্যটা সামনে আসা উচিত। তার জন্যই তাঁরা উপাচার্যের সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সময় দেননি। এর থেকেই কংগ্রেস নেতা-নেত্রীদের মনে হয়েছে, সত্যের মুখোমুখি হতে হবে বলেই উপাচার্য তাঁদের এড়িয়ে গিয়েছেন।
এদিকে হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভার রুমে ভাঙচুরের অভিযোগে ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ- সহ নয় পড়ুয়ার বিরুদ্ধে নোটিস জারি করেছে দিল্লি পুলিশ। সোমবার থেকে দিল্লি পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে বলে সুত্রের খবর। সাতদিন কেটে গেলেও ঐশীদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত কাউকে পুলিশ এখনও গ্রেফতার না করায় তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন পড়ুয়ারা। এসএফআই-এর সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস বলেন, বোঝাই তো যাচ্ছে, কেমন তদন্ত হচ্ছে। ঐশী জানান, তাঁরা এখনও উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে অনড়। রবিবার জেএনইউতে গিয়ে ঐশী এবং আন্দোলনকারী অন্য পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর।
Comments are closed.