উপাচার্যের ভাষণের ভিডিয়ো তুলে বিশ্বভারতীতে বহিষ্কৃত ছাত্র, ফের আন্দোলনের হুমকি পড়ুয়াদের

এক ছাত্রকে হস্টেল থেকে বহিষ্কার করে ফের পড়ুয়াদের হাতে আন্দোলনের অস্ত্র তুলে দিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে উপাচার্যের ভাষণের ভিডিয়ো করা এবং তা ছড়ানোর অভিযোগে ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে পূর্বপল্লি সিনিয়র বয়েজ হস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পড়ুয়ারা ইতিমধ্যে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, উপাচার্যের অসাংবিধানিক বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য একজন ছাত্রকে হস্টেল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল? এটা আমরা মানতে পারছি না। ওকে হস্টেলে না ফেরানো হলে আমরা আন্দোলনে নামব খুব শীঘ্রই।
ওই ভিডিয়ো ফুটেজে উপাচার্যকে বলতে শোনা যায়, সংবিধান তৈরি হয়েছিল সংখ্যালঘুর ভোট দিয়ে। সংবিধান অপছন্দ হলে তা বদল করা যেতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তাঁর ওই বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ওই ভাষণটি ভিডিয়ো করেন ছাত্রটি। তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্তে নামে। তারপর সোমবার রাতে ছাত্রটির হাতে বহিষ্কারের চিঠি ধরিয়ে দেন প্রোক্টর। চিঠির ধরন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন পড়ুয়ারা। বাঁকুড়ার একটি গরিব পরিবারের ওই ছাত্রের এমন ক্ষমতা নেই যে, তিনি শান্তিনিকেতনে বাড়ি ভাড়া করে কিংবা মেসে থাকবেন। মঙ্গলবার তিনি দেশের বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।
গত ৮ জানুয়ারি বিশ্বভারতীতে এনআরসি এবং নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভাষণ দিতে গিয়ে বাম পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ঘেরাও হয়ে থাকেন তিনি, উপাচার্য এবং অন্য অতিথিরা। পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। এরপর ১৫ জানুয়ারি হস্টেলে এবং রাস্তায় মারধর করা হয় বাম সমর্থক দুই ছাত্রকে। অভিযোগ, টিএমসিপি ছেড়ে এবিভিপিতে যোগ দেওয়া জনা তিনেক ছাত্র এই হামলার সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যাওয়া একটি ভিডিয়ো সামনে আসে। তাতে দেখা যায়, একটি মশাল মিছিল চলাকালীন উপাচার্য কোনও এক ছাত্রকে বলছেন, ওদের একটু ওষুধ দিয়ে দাও। বাইক বাহিনী নিয়ে এস। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করে, ওই গলাটি উপাচার্যের নয়। তাদের আরও দাবি, ভিডিয়োটি ভুয়ো। বিভিন্ন মহলের চাপে পড়ে সব ঘটনার তদন্তের জন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ প্রাক্তন বিচারপতি জোতির্ময় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে। কয়েকদিনের মধ্যেই সেই কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ার কথা।

Comments are closed.