শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল। প্রথম হয়েছেন ঝাড়খণ্ডের দেওঘর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের ছাত্র সৌরদীপ দাস। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয়েছেন যথাক্রমে দুর্গাপুরের ডিএভি মডেল স্কুলের ছাত্র শুভম ঘোষ এবং দিল্লি পাবলিক স্কুল রুবি পার্কের শ্রীমন্তী দে।
জয়েন্টে প্রথম হলেও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কোনও শাখাতেই থাকার ইচ্ছে নেই রায়গঞ্জের সৌরদীপের। ছোট থেকেই গণিতের প্রতি তাঁর আলাদা দুর্বলতা। বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সেস (IISC)-এ অঙ্ক ও পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করতে চান তিনি। বেঙ্গালুরুর আইআইএসসিতেই ভর্তির ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন রাজ্য জয়েন্টে তৃতীয় স্থানাধিকারী শ্রীমন্তী দে-ও। পাশাপাশি আইআইটি-তে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। রাজ্য জয়েন্টে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী শুভম ঘোষ জানিয়েছেন তাঁর আইআইটিতে পড়ার ইচ্ছে।
জয়েন্টে প্রথম স্থানাধিকারী সৌরদীপ জানিয়েছেন, এক বছর আগে কিশোর বৈজ্ঞানিক প্রোৎসাহন যোজনা (কেভিপিওয়াই) পরীক্ষায় দেশের মধ্যে ৪৮ তম এবং তফসিলি জাতিভুক্ত পড়ুয়াদের মধ্যে দেশে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আইআইএসসি-তে ভর্তির সুযোগ তিনি ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছেন। ভারতের বিজ্ঞান গবেষণার সব চেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান বলা হয় বেঙ্গালুরুর আইআইএসসি-কে। ভবিষ্যতে সেখানেই গবেষণা করতে চান সৌরদীপ। তবে ছেলের ইচ্ছেপূরণ নিয়ে উদ্বেগে সৌরদীপের বাবা শঙ্কর দাস। উত্তর দিনাজপুরের সহ-কৃষি অধিকর্তার (শস্য সুরক্ষা) পদে রয়েছেন তিনি। শঙ্কর বাবু জানান, করোনা আবহে এ বছর আইআইএসসি-র ভর্তি প্রক্রিয়া পিছিয়ে গিয়েছে। কবে চালু হবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি। সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৭.৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন সৌরদীপ দাস।
মেয়েদের মধ্যে প্রথম হওয়া শ্রীমন্তী দে জানাচ্ছেন, আইআইএসসির পাশাপাশি ভবিষ্যতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে গবেষণা করার ইচ্ছা তাঁর। সেক্ষেত্রে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং করাই তাঁর প্রথম পছন্দ। সিবিএসই তে ৯৮.২ শতাংশ নম্বর পাওয়া শ্রীমন্তী জানান, এখন জয়েন্ট অ্যাডভান্সড-এর জন্য জোরকদমে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চান রাজ্যে জয়েন্ট এন্ট্রাসে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করা পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের শুভম ঘোষও। ডিএসপি টাউনশিপের বাসিন্দা শুভমের মা কল্যাণী দেবী দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালের নার্স। বাবা বিশ্বনাথবাবু উত্তরাখণ্ডে সেনা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক। দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় ৯৯.০৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন শুভম। তিনি জানান, এখন জেইই অ্যাডভান্সডের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রাজ্য বা রাজ্যের বাইরে যেখানেই সুযোগ হবে পড়তে চলে যাব, বলেন শুভম।
এ বছর রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা হয়েছিল ২ ফেব্রুয়ারি। আবেদন করেছিলেন ৮৮ হাজার ৮০০ পড়ুয়া। পরীক্ষায় বসেন ৭৩,১১৯ জন। র্যাঙ্ক পেয়েছেন ৭২,২৯৮ জন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের ৩৬,৪৮৫ জন (৫১ শতাংশ), সিবিএসই-র ২২,২৭০ জন (৩১ শতাংশ), আইএসসি-র ২,২২৬ জন (৩ শতাংশ) এবং অন্যান্য বোর্ডের ১১,৩১৭ জন (১৫ শতাংশ) পড়ুয়া র্যাঙ্ক কার্ড পেয়েছেন। মোট উত্তীর্ণ ৫১,২৩৫।
Comments are closed.