ডিসেম্বর মাসের ২ তারিখ হয়ে গেল। এখনও শহর কলকাতায় লোকজনের গায়ে গরম জামা কাপড় তেমন দেখা যাচ্ছে না, গলায় ঝুলতে দেখা যাচ্ছে না মাফলার। খুব বয়স্কদের বাদ দিলে অল্প কয়েকজনের গায়ে শীত-পোশাক উঠেছে। উলটে এখনও রাতে অনেক বাড়িতেই ফ্যান চালিয়ে শুতে হচ্ছে। কেউ রেগুলেটর কমের দিকে রাখছেন। কেউ আবার ফুল স্পিডেই পাখা চালিয়ে দিচ্ছেন জানলা বন্ধ রেখে। ট্রেনে, ট্রামে, বাসে, রাস্তায় অনেককেই বলতে শোনা যাচ্ছে, বলি হলটা কী, এবার কি আর শীত পড়বে না?
দিল্লির মৌসম ভবন বলছে, এবার শীত আর তার খেলা দেখাবে না। বলা যেতে পারে, এবার দেশে গোটা শীতকালটাই উষ্ণতম হয়ে থাকতে পারে। কেন এই হাল? আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় জলের তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণেই এই দশা শীতের। তাঁদের বক্তব্য, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা ভারী বায়ু বা পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান হয়ে কাশ্মীরে ঢোকে। সেখানে সেই ঝঞ্ঝা তুষারপাত ঘটায়। সেই ঠান্ডা হাওয়াই ধীরে ধীরে পূর্ব ভারতে আসে। এখন কাশ্মীরে সেই ঝঞ্ঝা না থাকায় কনকনে উত্তুরে হাওয়া বইছে না। তাই তাপমাত্রাও কমার লক্ষন দেখা যাচ্ছে না।
আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে, রবিবার, ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ডিগ্রি বেশি। অথচ ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ডিগ্রি কম।
ঠান্ডার যদি এই হাল হয়, তাহলে আর এবার শীতের মজা জমবে কেমন করে? শীতের রোদ্দুর গায়ে মেখে পিকনিক, এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ানো, সবই যে মাটি হওয়ার যোগাড়। রবিবার অনেক বিয়ের তারিখ ছিল। বহু বিয়েবাড়িতেই গরমে ঘামে বর-কনের সাজ গিয়েছে নষ্ট হয়ে। বিয়েবাড়িতে আমন্ত্রিতরাও ঘেমে নেয়ে অস্থির হয়েছেন, তাঁদেরও সাজগোজ ঘেঁটে গিয়েছে। ভোজনরসিকরা সেভাবে ভালো করে খেতেও পারেননি।
Comments are closed.