কঙ্গনা রানাওয়াত Y প্লাস: কেন্দ্রীয় সিকিউরিটি পাওয়ার যোগ্যতা কী, কে বহন করে খরচ?

বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতকে যে ওয়াই প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে আলোচনা দেশজুড়ে। কেউ কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছেন, কেউ করছেন সমালোচনা। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কোন মাপকাঠিতে কোনও ব্যক্তি কেন্দ্রের সুরক্ষা পেতে পারেন। কোন কোন ক্ষেত্রে দেওয়া হয় এই ধরনের কেন্দ্রীয় সুরক্ষা, কাদের সিদ্ধান্তে এই সুরক্ষা দেওয়া হয়, কারাই বা এই নিরাপত্তার খরচ বহন করেন?

এখন কঙ্গনাকে ঘিরে রয়েছেন ১১ জন কমান্ডো। যার মধ্যে দু’জন মোবাইল কমান্ডো, আর একজন কমান্ডো অভিনেত্রীর বাসভবনের নিরাপত্তায়। তবে যে কেউ এই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান না। সচরাচর সরকার কিংবা সিভিল সোসাইটির কোনও বড়ো মুখ, তাঁদের বিপদের কথা আঁচ করে এই ‘ভিআইপি’ নিরাপত্তা দেওয়া হয়।

কেন্দ্র কীভাবে কাউকে ভিআইপি সুরক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়? কে সিদ্ধান্ত নেন এই ক্যাটেগরির সিকিউরিটি কেউ পাবেন কিনা?

ব্যক্তি বিশেষে কারও জীবনহানির আশঙ্কা থাকলে বা বড়ো হুমকির মুখে পড়লে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তার জন্য কেন্দ্রীয় এজেন্সি যেমন আইবি বা র’এর রিপোর্টের উপর নির্ভর করতে হয় মন্ত্রককে।

এবার প্রশ্ন উঠতে পারে, জীবনহানির আশঙ্কার দিকে তাকিয়ে বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত যদি ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা পান, তাহলে ২০১৭ সালে যখন করনি সেনার হুমকির মুখে পড়েছিলেন অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন, তিনি কেন এই নিরাপত্তা পাননি?

কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি যে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করে, বিশেষত ভিআইপিদের সুরক্ষা যেখানে জড়িত, তা প্রকাশ্যে আনা হয় না। তাই বহুবার অভিযোগ উঠেছে, বড়ো বিপদের আশঙ্কা না থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তাদের প্রেস্টিজ ইস্যু বা রাজনৈতিক কারণে কাউকে এই সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রদান করেছে।

কেন্দ্রীয় সিকিউরিটি কভারের মোটামুটি ছটি ভাগ। এক্স, ওয়াই, ওয়াই-প্লাস, জেড, জেড-প্লাস এবং এসপিজি (বিশেষ সুরক্ষা গোষ্ঠী)। এর মধ্যে এসপিজি কেবল প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর পরিবারের জন্য। অন্য ক্যাটেগরির নিরাপত্তাগুলি ব্যক্তি বিশেষে দেওয়া হয়ে থাকে। অবশ্য কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারগুলি যদি বড়ো কোনও আশঙ্কা আঁচ করে। যার মধ্যে এক্স (X) ক্যাটেগরির নিরাপত্তা হল সুরক্ষার প্রাথমিক স্তর। এই ক্যাটেগরির নিরাপত্তায় সাধারণত একজন বন্দুকধারী থাকেন। ওয়াই (Y) ক্যাটেগরিতে একজন বন্দুকধারী থাকেন মোবাইল সিকিউরিটির দায়িত্বে। এছাড়াও চারজন কেন্দ্রীয় সিকিউরিটি থাকেন নিরাপত্তার দায়িত্বে। ওয়াই প্লাস (Y-plus) ক্যাটেগরিতে থাকেন দু’জন বন্দুকধারী মোবাইল সিকিউরিটির জন্য। চারজন রোটেশনে থাকেন। একজন থাকেন বাসভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে। চারজন থাকেন রোটেশনে।

জেড (Z) সিকিউরিটি কভারে ছয়জন বন্দুকধারী থাকেন মোবাইল সিকিউরিটিতে। দুজন (প্লাস ৮) নিয়োজিত থাকেন বাসভবনের বাইরে। আর জেড প্লাস (Z-plus) সুরক্ষায় ১০ জন নিরাপত্তারক্ষী মোবাইল সিকিউরিটিতে থাকেন। দু’জন (প্লাস ৮) থাকেন রেসিডেন্স সিকিউরিটির দায়িত্বে। তবে এই লেভেলগুলির ভিতরে আবার বিভিন্ন রকম ভাগ থাকে। থ্রেট পারসেপসন বা হুমকির আশঙ্কার দিকে খেয়াল করে তার নিয়োগ হয়।

 

কারা বহন করে এই ভিআইপি সিকিউরিটির খরচ? 

ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির খবর মাফিক কোনও ব্যক্তির জীবনহানির আশঙ্কা থাকলে তাঁকে কেন্দ্র নিরাপত্তা দিলে, তা সাধারণত বিনামূল্যেই দেওয়া হয়। তবে ব্যক্তিবিশেষে ভিআইপি নিরাপত্তা দিলে তার খরচ নেওয়ার অধিকার আছে সরকারের। যেমন, ২০১৩ সালে আইবি খবর পায় মুকেশ আম্বানীর জীবনহানির আশঙ্কা আছে। সে সময় তাঁকে জেড ক্যাটেগরি সিআরপিএফ কভার দিয়েছিল কেন্দ্র। তবে তার জন্য আম্বানীকে মাসে ১৫ লক্ষ টাকা চার্জ দিতে হয়েছিল।

Comments are closed.