বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, অপর্ণা সেনদের বিরুদ্ধেও মামলা করেছিলেন সুশান্ত রাজপুতের মৃত্যুতে সলমনদের বিরুদ্ধে মামলাকারী আইনজীবী
মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটে আত্মঘাতী হয়েছেন সুশান্ত সিংহ রাজপুত। কিন্তু কেন নিজেকে শেষ করলেন বলিউডের তরুণ অভিনেতা? কী এমন হয়েছিল যে সুশান্তকে চরম সিদ্ধান্ত নিতে হল? মানসিক সমস্যা নাকি অন্য কোনও চাপ?
অভিযোগ উঠছে অদৃশ্য কোনও অঙ্গুলিহেলনে একের পর এক ফিল্মের কাজ হাতছাড়া হচ্ছিল সুশান্তের। মুম্বইয়ের কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপম সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি ট্যুইট করে সেই জল্পনাকে অন্য মাত্রা দেন। তিনি ট্যুইটে লেখেন, ছিছোড়ের সাফল্য সত্ত্বেও গত ৬ মাসে সুশান্তের হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল ৭ টি ফিল্মের কাজ। সেই হতাশাতেই কি চরম সিদ্ধান্ত? সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও না মিললেও বুধবার বিহারের এক আদালতে সলমন খান, করণ জোহর, সঞ্জয় লীলা বনসালি, একতা কাপুর সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়ে গেল। মামলাকারী সুধীরকুমার ওঝা।
সংবাদসংস্থা ANI কে মামলাকারী জানিয়েছেন, সুশান্ত সিংহ রাজপুতের আত্মহত্যার ঘটনায় আমি সলমন খান, করণ জোহর, সঞ্জয় লীলা বনসালি, একতা কাপুর সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬, ১০৯, ৫০৪ ও ৫০৬ নম্বর ধারায় মুজফফরপুর আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
আদালতে কী হবে তা পরের প্রশ্ন কিন্তু জানেন কে এই সুধীরকুমার ওঝা? দেশের বিভিন্ন নামী ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মুজফফরপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন এই আইনজীবী। কখনও সেই মামলা গৃহীত হয় আবার কখনও তা খারিজ করে দেয় আদালত। মুজফফরপুরের আইনজীবী অতীতে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে যেমন মামলা করেছেন, তেমনই তাঁর মামলার মুখে পড়তে হয়েছে শচীন তেণ্ডুলকর থেকে শুরু করে আমির খান, অপর্ণা সেন, অমিতাভ বচ্চন, রাজ ঠাকরে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, লালু প্রসাদ যাদবকেও।
বিভিন্ন বিখ্যাত মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেই বর্তমানে খ্যাতির শীর্ষে মুজফফরপুরের সুধীরকুমার ওঝা।
রামসেতু একটি প্রাকৃতিক কাঠামো, এ কথা বলে একদা সুধীরকুমারের মামলার মুখে পড়ার উপক্রম হয়েছিল বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের। কিন্তু বিহারের তৎকালীন রাজ্যপাল সেই মামলার অনুমতিই দেননি। ফলে মামলাও আর হয়নি। তাতে অবশ্য থামেননি সুধীর। শচীন তেণ্ডুলকরকে কেন ভারতরত্ন দেওয়া হল, তা নিয়ে শচীন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিণ্ডের বিরুদ্ধেও মামলা করেছিলেন। আদালতে খারিজ হয় সেই মামলা। বলিউডের তারকা আমির খান কিংবা অমিতাভ বচ্চনের বিরুদ্ধেও একইভাবে মামলা করেন মুজফফরপুর কোর্টে। সুধীরের মামলার তালিকায় যেমন আছেন মুম্বইয়ের রাজনীতিবিদ রাজ ঠাকরে, তেমনই বিহারের নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধেও মামলা করেছিলেন সুধীরকুমার ওঝা। সাম্প্রতিক কালে দেশে অসহিষ্ণুতা এবং উগ্র হিন্দুত্বকে হাতিয়ার করে ঘটে চলা হিংসার বিরুদ্ধে একজোট হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন অপর্ণা সেন, সৌমিত্র চ্যাটার্জি, শ্যাম বেনেগাল, অনুরাগ কাশ্যপ, কঙ্কনা সেনশর্মা, রামচন্দ্র গুহরা। সেই খোলা চিঠির প্রেক্ষিতে সুধীরকুমার ওঝা মামলা করেন সাক্ষরকারীদের বিরুদ্ধে। এরপর ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা শুরু হয়। পরে অবশ্য অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হয়।
জানা গিয়েছে, এ যাবৎ কোর্টে ৭৫০ র উপর জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী ওঝা। তার মধ্যে খারিজ হয়েছে ১৩০ টিরও বেশি মামলা।
এবার বলিউড তারকা সলমন খান, করণ জোহরদের বিরুদ্ধে পাটনার আদি বাসিন্দা সুশান্তের আত্মহত্যার প্রেক্ষিতে মামলা দায়ের করলেন সুধীরকুমার ওঝা।
Comments are closed.