‘আনন্দবাজারে ছাঁটাইয়ের বিরোধী ছিলেন অনির্বাণ’, সদ্য প্রাক্তন সম্পাদকের ইস্তফা নিয়ে স্ত্রী মধুমিতা চট্টোপাধ্যায়ের ফেসবুক পোস্ট
সাবেকি সংবাদপত্র বা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে প্রকাশিত কোনও খবর নয়, গত ৫-৬ দিন ধরে রাজ্যে অন্যতম চর্চার বিষয় সংবাদমাধ্যমের খবর!
মে মাসে শেষে আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দেন অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়। আচমকা ইস্তফার কারণ এবং তার আগের কিছু ঘটনা নিয়ে শুরু হয় নজিরবিহীন জল্পনা, গুজব।
১ জুন TheBengalStory তে প্রকাশিত হয় কেন ইস্তফা দিলেন আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়? পুলিশকে কী চিঠি দিয়েছিলেন তিনি? শীর্ষক একটি প্রতিবেদন। তাতে সম্পাদক অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়ের ইস্তফা নিয়ে দুটি সম্ভাব্য কারণের উল্লেখ করা হয়েছিল। প্রথম কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠীর লাগাতার ছাঁটাইয়ের যে পরিকল্পনা, তার বিরোধিতা করেছিলেন অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়। এবং তা নিয়ে তাঁর সঙ্গে সংঘাত হয় কর্তৃপক্ষের। নিজের দফতরে এত কর্মীর ছাঁটাই মানতে পারেননি সম্পাদক।
দ্বিতীয় সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, ওই সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি খবরের প্রেক্ষিতে তাঁকে হেয়ার স্ট্রিট থানার সমন। পুলিশের সমনের প্রেক্ষিতে অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় পুলিশকে পাঠানো চিঠিতে লেখেন, তিনি সিনিয়র সিটিজেন এবং কোভিড পরিস্থিতিতে ডাক্তার তাঁকে পাবলিক প্লেসে যেতে নিষেধ করেছেন। পাশাপাশি তিনি হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন এবং সঙ্গে চিকিৎসকেরও একটি চিঠি পাঠান থানায়। তাঁকে পুলিশের হেনস্থা এবং গ্রেফতারির যে জল্পনা হয়েছে তা সর্বৈব মিথ্যে।
এবার আনন্দবাজার পত্রিকার সদ্য প্রাক্তন সম্পাদকের স্ত্রী তথা আনন্দবাজার গোষ্ঠীরই প্রাক্তন কর্মী মধুমিতা চট্টোপাধ্যায় অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়ের ইস্তফার কারণ স্পষ্ট করলেন। ৩ জুন, বুধবার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে TheBengalStory র প্রতিবেদনকেই কার্যত মান্যতা দিয়ে মধুমিতা চট্টোপাধ্যায় লেখেন, ‘ব্যবসা পোক্ত করতে ছাঁটাইয়ের বিরোধী ছিলেন অনির্বাণ। তাঁর অবস্থান ছিল, যতভাবে সম্ভব খরচ কমাও, ন্যূনতম বেতন যাতে সবাই পায় তা নিশ্চিত করো। এভাবে যাঁদের বেতন বেশি তাঁদের বেতন কাটো, কিন্তু অন্য কোনও উপার্জনের ব্যবস্থা না করে চাকরি থেকে কাউকে ছাঁটাই করো না, বিশেষ করে এই সময়ে। শুরু থেকেই এই অবস্থান ছিল আনন্দবাজার পত্রিকার সদ্য প্রাক্তন সম্পাদকের। অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী লিখেছেন, ব্যক্তিগত আদর্শের সঙ্গে কখনও কখনও সাংগাঠনিক নীতির সংঘাত হয়। তারপর মধুমিতা লিখেছেন, আমি আবারও বলতে চাই, অনেক আগেই ইস্তফার ব্যাপারে মনস্থির করে ফেলেছিলেন অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়।
এরপর তিনি ফের লিখেছেন, কাকতালীয় ব্যাপার কিনা জানি না কিন্তু আনন্দবাজার পত্রিকায় ছাঁটাইয়ের বিষয়টি আবার সামনে চলে আসে অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পাদক পদে শেষ দিনের সপ্তাহখানেক আগে। যে ঘটনা অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর পরিবারকে বিরক্ত করেছিল, কিন্তু তা চাকরিরই অঙ্গ। পাশাপাশি মধুমিতা চট্টোপাধ্যায় পোস্টে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়কে থানায় যেতে হয়নি, তাঁকে জেরা করা হয়নি এবং তাঁকে কোনও জায়গা থেকে চাপ দেওয়া হয়নি।
পড়ুন ফেসবুক পোস্টে কী লিখেছেন আনন্দবাজার পত্রিকার সদ্য প্রাক্তন সম্পাদকের স্ত্রী মধুমিতা চট্টোপাধ্যায়
(অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় ও মধুমিতা চট্টোপাধ্যায়ের ছবি ফেসবুক থেকে নেওয়া)
Comments are closed.