কেরল বাদে দক্ষিণের ৪ রাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার জাতীয় গড়ের চেয়েও বেশি, দেশে একদিনে সাড়ে ২২ হাজারেরও বেশি সংক্রমিত
শুক্রবার ভারতে নতুন করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ২২,৭১৪। দেশে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে সাড়ে ৬ লক্ষের কাছাকাছি। এই পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবণতা। দক্ষিণ ভারতের ৪ রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির হার জাতীয় গড়ের চেয়েও বেশি।
ভারতে করোনাভাইরাসের আগমণের পর থেকেই একটা জিনিস স্পষ্ট, দেশের মহানগরগুলোতে প্রাথমিকভাবে ভাইরাসের প্রকোপ বেশি। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার পর থেকে আমূল বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। এতদিন সংক্রমণ যেখানে সীমাবদ্ধ ছিল কেবলমাত্র বড় শহর ও শিল্পাঞ্চলে, সেখানে এবার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে গ্রামীণ ভারতে। তারপরও কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকটা দিন। এবার কী অবস্থা দেশের সংক্রমণের হারের?
শুক্রবারের পরিসংখ্যান থেকে উঠে এসেছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবণতা। গত কয়েকদিনের ট্রেন্ড বিচার করে দেখা যাচ্ছে দক্ষিণের ৪ রাজ্যে ক্রমেই বাড়ছে সংক্রমিতের সংখ্যা। এই ৪ টি রাজ্য হল তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশ। এই ৪ রাজ্যই দেশের সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমিতের (ম্যাক্সিমাম কেস লোড) বাস। দেশের প্রথম ১০ রাজ্যের তালিকায় দক্ষিণের ৪ রাজ্য একেবারে উপরের দিকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রে করোনা কেস বাড়ছে জাতীয় গড়ের চেয়েও দ্রুতহারে।
মহারাষ্ট্র এখনও প্রতিদিন সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনা সংক্রমিতের খোঁজ দিয়ে চলেছে। যদিও মহারাষ্ট্রের বৃদ্ধির হার ৩.৪০ শতাংশ, যা এখনও যথেষ্ট কম। বৃদ্ধির জাতীয় হার ৩.৫৪ শতাংশ। আর এখানেই এগিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণের ৪ রাজ্য। দেশের দক্ষিণাংশের ৪ রাজ্যে যেমন প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন, তেমনই বৃদ্ধির হারও অনেকটা বেশি। বৃদ্ধির হারে এই ৪ রাজ্যই দেশে সবচেয়ে এগিয়ে।
গত এক সপ্তাহে তামিলনাড়ুতে ২৮ হাজারেরও বেশি নতুন সংক্রমিতের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। শুক্রবারই দেশের দক্ষিণতম রাজ্যের মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ১ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। কর্ণাটক ও তেলেঙ্গানায় সংক্রমণ বৃদ্ধির হার দ্রুততম। দুই রাজ্যেই গত এক সপ্তাহে ৮ হাজারেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। শুরুতে অন্ধ্রপ্রদেশ সংক্রমণ বৃদ্ধির দৌড়ে পিছিয়ে থাকলেও, গত এক সপ্তাহে সাড়ে ৫ হাজার নতুন কেস পাওয়া গিয়েছে সে রাজ্যে।
দক্ষিণ ভারতে একমাত্র ব্যতিক্রম কেরল। গত ১ সপ্তাহে সেই রাজ্যে ১ হাজারের সামান্য বেশি মানুষ নতুন সংক্রমিত হয়েছেন। যদিও কেরলের সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ৩.৬ শতাংশ, যা জাতীয় গড়ের চেয়ে সামান্য বেশি। পিনারাই বিজয়নের রাজ্যে বর্তমানে ৫ হাজারের কম সংক্রমিত আছেন। কিন্তু কেরলে মৃত্যুহার অত্যন্ত কম। এখনও পর্যন্ত সেখানে মৃত্যু হয়েছে মাত্র ২৪ জনের, যা আবার জাতীয় গড়ের ঢের কম।
মহামারির প্রকোপ শুরুর পর থেকে এই প্রথমবার দক্ষিণের রাজ্যগুলো সংক্রমণের ক্ষেত্রে একেবারে চালকের আসনে। যদিও খুব পিছিয়ে নেই দেশের অন্যান্য রাজ্য। তবে এই মুহূর্তে চিন্তা বাড়িয়েছে তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ।
Comments are closed.