সংসদে আগুনে বক্তৃতায় নকশাল নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের বাহবা কুড়োলেন মহুয়া মৈত্র, প্রশংসা করে ট্যুইট

লোকসভায় প্রথম বক্তৃতাতেই বাজিমাত করেছেন। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের প্রথম বক্তৃতার প্রশংসা চলছে সরকার-বিরোধী, উভয় পক্ষেই। যেভাবে পরপর ৭ টি কারণ সাজিয়ে বলেছেন কেন দেশের সংবিধান আক্রান্ত। সংসদে দাঁড়িয়ে যেভাবে জানিয়েছেন, এই প্রবণতা ফ্যাসিবাদেরই নামান্তর। সাবলীল ইংরেজির সঙ্গে কাব্যিক মিশেল ঘটিয়েছেন হিন্দির। সব শেষে হিন্দি কবিতার মধ্যে দিয়েই সরকার পক্ষের দিকে ছুঁড়ে দিয়েছেন মোক্ষম কটাক্ষ। তিনি মহুয়া মৈত্র। যাঁর প্রথম লোকসভা বক্তৃতার পরই প্রশংসায় পঞ্চমুখ সংবাদ মাধ্যম থেকে সাধারণ মানুষ। মহুয়ার বক্তৃতার ক্লিপ ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে লাইক, কমেন্ট শেয়ারের ছড়াছড়ি। এবার মহুয়া মৈত্রের আগুনে ভাষণের প্রশংসা শোনা গেল রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ অন্য মেরুর বাসিন্দা সিপিআইএমএল লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের মুখে।

বুধবার সকালে সিপিআইএমএল লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য একটি ট্যুইট করেন। তাতে মহুয়া মৈত্রের লোকসভায় বক্তৃতা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন শেয়ার করার পাশাপাশি দীপঙ্কর ভট্টাচার্য লেখেন, ‘সাহসী ও শক্তিশালী প্রথম বক্তৃতা’। তারপর সিপিআইএমএল লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর লেখেন, ‘বাংলায় আপনার দল তৃণমূল যা করছে, তার বেশিরভাগের সঙ্গেই সহমত নই। কিন্তু এটা আমাকে মানতেই হবে, ভারতের জনগণের উপর মোদী সরকার যেভাবে ফ্যাসিবাদ নামিয়ে আনছে, তার বর্ণনা আপনি যেভাবে দিয়েছেন, তা একেবারে সঠিক’। আমরা করব জয়, একেবারে শেষে এই লাইনটিও লিখেছেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন এবং আইএসআইয়ের প্রাক্তনী দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।

রাজনৈতিকভাবে তৃণমূল এবং সিপিআইএমএল লিবারেশন দুই ভিন্ন মেরুর বাসিন্দা। মানুষের মুক্তির পথ ভিন্ন দুই রাজনৈতিক শক্তিরও। তৃণমূল মূলত দক্ষিণপন্থী দল হিসেবে পরিচিত, অন্যদিকে সিপিআইএমএল লিবারেশন কট্টর বামপন্থার সমর্থক। বামেদের শেষ ব্রিগেড সমাবেশে বাম নেতাদের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নিয়েছেন দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। কিন্তু কংগ্রেস-সিপিএম জোটের আবহে বামফ্রন্ট ছাড়ে সিপিআইএমএল লিবারেশন। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বিহার, ঝাড়খণ্ডের মতো বেশ কয়েকটি রাজ্যে সিপিআইএমএল লিবারেশনের ভালো জনভিত্তিও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল সাংসদের বক্তৃতার প্রশংসা করে নকশাল নেতার ট্যুইট অন্য তাৎপর্য বহন করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

Comments are closed.