৩ মাসে গোটা জেলায় জন্মায়নি একজনও কন্যা, উত্তরাখণ্ডে চাঞ্চল্যকর সরকারি রিপোর্ট প্রকাশ্যে, কন্যাভ্রুণ হত্যার অভিযোগে সরব সমাজকর্মীরা

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্পের বিজ্ঞাপনের জন্য খরচ হয়েছে কোটি কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী মোদী বারবার নিজমুখে এই প্রকল্পের বর্ণনা দিতে গিয়ে নিউ ইন্ডিয়ায় নারী শক্তির প্রবল উত্থানের কথা বলেছেন। কিন্তু বাস্তব কী বলছে? সত্যিই কি ভারতে মেয়েদের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো? সম্প্রতি এই প্রশ্নের এক করুণ চিত্র দেখা গিয়েছে বিজেপি শাসিত উত্তরখণ্ডে।

সরকারি একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশি জেলার ১৩২ টি গ্রামে গত ৩ মাসে একটিও কন্যা সন্তান জন্মায়নি। অথচ এই সময়ের মধ্যে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়েছে ২১৬ টি। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই মোদী সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের উপযোগিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

উত্তর কাশির জেলা শাসক আশিস চৌহানের মন্তব্য, ঠিক কোন কোন এলাকায় কন্যা সন্তানের জন্মহার শূন্য, তা খতিয়ে দেখে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। ঠিক কী কারণে এমন অবস্থা, তা বুঝতে আশা কর্মীদের সঙ্গেও নিয়মিত বৈঠক করছে জেলা প্রশাসন।

সংবাদসংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সমাজকর্মী কল্পনা ঠাকুরের অভিযোগ, এই রিপোর্ট থেকেই পরিষ্কার, খাতায় কলমে যতোই নারী শক্তির জয়গান গাওয়া হোক, বাস্তবে কন্যা ভ্রুণ হত্যার ট্র্যাডিশনে কোনও ছেদ পড়েনি। প্রশাসন স্রেফ হাত গুটিয়ে বসে আছে। এভাবে চললে দেশে নারী-পুরুষ অনুপাত ভয়াবহ আকার ধারণ করবে, আশঙ্কা কল্পনা ঠাকুরের। এলাকার বাসিন্দা সিনিয়র সাংবাদিক শিব সিংহ থানভল অবশ্য বলছেন, এই ঘটনার দায় নিতে হবে সরকারকেই। কারণ সরকারি প্রকল্পের অন্তর্গত বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও। সেখানে একটি জেলায় যদি ৩ মাস ধরে ২০০ র বেশি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করে এবং একটিও কন্যা সন্তানের জন্ম না হয়, তাহলে কন্যা ভ্রুণ হত্যার বিষয়টি জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। এই বিষয়ে সরকার কীভাবে তার দায় এড়াবে, প্রশ্ন শিব সিংহ থানভলের। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও মানসিকতা বদল প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

সরকারি রিপোর্টে এই তথ্য প্রকাশ্যে চলে আসায় বেজায় অস্বস্তিতে জেলা প্রশাসন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে কারণ অনুসন্ধান। সোমবার আশাকর্মীদের সঙ্গে জেলা শাসকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গঙ্গোত্রীর বিধায়ক গোপাল রাওয়াত।

Comments are closed.