৭০০ থেকে ১০ হাজার টাকার প্ল্যান নিয়ে আসছে জিও ফাইবার, স্টার্টিং স্পিড ১০০ এমবিপিএস! জানেন কী আছে প্ল্যানে?
আর মাত্র কয়েকদিন। তারপরেই বাজারে নেমে পড়ছে জিও ফাইবার। যা বদলে দেবে ভারতের চিরাচরিত ইন্টারনেট এবং টিভি ভিউয়িংকে। জিও ফাইবার নিয়েই এখন তুমুল আলোচনা দেশে। ১২ ই অগাস্ট সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভায় একথা ঘোষণা করেন রিলায়েন্স কর্ণধার মুকেশ আম্বানী। পাশাপাশি ভারতের বিনোদন জগতের অভিমুখ সম্পূর্ণ বদলে দেওয়ার মতো ঘোষণাও এল এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তির মুখ থেকে। তিনি বললেন, যে কোনও সিনেমা মুক্তির দিনই ঘরে বসে তা উপভোগ করা যাবে। প্রয়োজন হবে না সিনেমা হল বা মাল্টিপ্লেক্সে ছোটার। আর খরচ? মুকেশ আম্বানীর ঘোষণা, মাসিক ৭০০ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যেই ঘোরাফেরা করবে জিও ফাইবারের খরচ।
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের বার্ষিক সাধারণ সভায় কর্ণধার মুকেশ আম্বানী ঘোষণা করেন, ৫ ই সেপ্টেম্বর থেকে দেশে শুরু হচ্ছে জিয়ো গিগা ফাইবার ব্রডব্যান্ড পরিষেবা। যা বদলে দেবে ভারতের টেলিকমের পাশাপাশি বিনোদনের চালচিত্রকেও। কীভাবে? আসুন দেখি ঠিক কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে রিলায়েন্সের নতুন ব্রডব্যান্ড পরিষেবায়।
জিও ফাইবারে সুযোগ-সুবিধা
প্রথমত ল্যান্ডলাইনে সম্পূর্ণ নিখরচায় দেশের মধ্যে ভয়েস কল করা যাবে। মাসে মাত্র ৫০০ টাকা খরচ করে করা যাবে আমেরিকা, কানাডায় ফোন, এছাড়াও বিনামূল্যে আন্তর্জাতিক কল। ন্যূনতম ব্রডব্যান্ড স্পিড হবে ১০০ এমবিপিএস। এক বছরের সংযোগ নিলে শর্তসাপেক্ষে বিনামূল্যে এইচডি বা ফোর-কে এলইডি টিভি। সঙ্গে ফোর-কে সেট টপ বক্স।
গিগা ফাইবার কী?
সাধারণ বৈদ্যুতিক কেবলের ইন্টারনেট পরিষেবার গতি ১০ এমবিপিএস থেকে ১০০ এমবিপিএসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু গিগা ফাইবার তার দিয়ে যে ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়া হয়, তার সর্বনিম্ন গতি ৫০ এমবিপিএস। আর সর্বোচ্চ গতি ১ জিবিপিএস।
কেন গিগা ফাইবার অনন্য?
অন্যান্য তার বাহিত ইন্টারনেট পরিষেবার সঙ্গে গিগা ফাইবারের মূল পার্থক্য হল, গিগা ফাইবারের ডেটা ট্রান্সমিশন কোনও টাওয়ার কেন্দ্রিক নয় বরং ডেডিকেটেড লাইন। অর্থাৎ এলাকার ইন্টারনেট সরবরাহকারী সংস্থা যখন ঝড়-বৃষ্টি বা আবহাওয়া খারাপের কারণে সার্ভার ডাউন হয়ে পড়ে এবং পরিষেবা দিতে ব্যর্থ হয়, তখনও অনায়াসে নিখুঁত পরিষেবা দিয়ে যাবে গিগা ফাইবার। কোনও টাওয়ারের উপর নির্ভর না করায়, গতি কমার কোনও প্রশ্ন নেই। রিলায়েন্স কর্ণধার যে গতির কথা বলছেন, তা প্রকৃতই পাওয়া গেলে গিগা ফাইবার লাইনে একটি এক জিবির ফাইল ডাউনলোড করতে সময় লাগবে ৯০ সেকেন্ডেরও কম। যেখানে সাধারণ ব্রডব্যান্ডে সময় লাগে ১৩ মিনিট থেকে ১৫ মিনিট।
নিয়মাবলী
প্রথম তিন মাস বিনামূল্যে পরিষেবা দেবে রিলায়্যান্স জিও। তবে মোডেম সমেত ওয়ান টাইম ইনস্টলেশন সিকিয়োরিটি ডিপোজিট বাবদ সাড়ে ৪ হাজার টাকা জমা করতে হবে। পরে পরিষেবা বন্ধ করতে চাইলে ডিপোজিটের পুরো টাকাটাই ফেরত পাওয়া যাবে।
ফার্স্ট ডে, ফার্স্ট শো!
জিয়ো ফাইবারের প্রিমিয়াম উপভোক্তারা ঘরে বসে যে কোনও সিনেমা দেখতে পারবেন, একেবারে মুক্তির দিনই। সিনেমা হল বা মাল্টিপ্লেক্সে যাওয়ার আর কোনও দরকারই পড়বে না। আম্বানী জানিয়েছেন, জিও ফাইবারের ফার্স্ট ডে, ফার্স্ট শো পরিষেবা চালু হবে ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে।
রিলায়েন্স কর্ণধার তাঁর ভাষণে বলেন, দুনিয়ার সবচেয়ে উন্নত অর্থনীতি আমেরিকায় ইন্টারনেটের গড় গতি ৯০ এমবিপিএস। সেখানে তিনি আনছেন ভারতে ১০০ এমবিপিএস গতি দিয়ে শুরু হওয়া জিও ফাইবার। আনুষ্ঠানিকভাবে জিও ফাইবার ৫ ই সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হলেও বর্তমানে কলকাতা সহ বেশ কয়েকটি মহানগরে পরীক্ষামূলকভাবে জিও ফাইবার পরিষেবা চলছে। আপাতত তা বিনামূল্যে। ৫ ই সেপ্টেম্বর থেকে তাদের মাসুল নির্ণয় হবে। জিও ফাইবার ইতিমধ্যেই ব্যবহার করা সাধারণ মানুষ যথেষ্টই খুশি। তাঁরা বলছেন, বিদ্যুৎ গতির ইন্টারনেট পরিষেবাই ভবিষ্যৎ।
Comments are closed.