ইউরোপীয় ইউনিয়নের এমপিদের ভারত সফরের আমন্ত্রণ গিয়েছিল জনৈক মাডি শর্মার কাছ থেকে। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই যাবতীয় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু মাডি শর্মা। কে এই মাডি শর্মা? কীভাবেই বা তিনি এত প্রভাবশালী হয়ে উঠলেন, যে কাশ্মীরকে ভারত যুগ যুগ ধরে দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলে বিশ্বের দরবারে সওয়াল করে এসেছে, সেই কাশ্মীরে বিদেশি জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আসার পরিকল্পনাকে বাস্তব রূপ দিলেন?
মাডি শর্মা নামে তাঁর ট্যুইটার হ্যান্ডেলের বায়োতে লেখা আছে, ‘সোশ্যাল ক্যাপিটালিস্ট- ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ব্রোকার, এডুকেশন এন্থ্রপ্রেনিয়র এবং স্পিকার’। কিন্তু তাঁর সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এমপিদের যোগাযোগের সেতু কী? জানা যাচ্ছে, ব্রাসেলসের বাসিন্দা মাডি শর্মা উইমেন্স ইকনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল থিঙ্ক ট্যাঙ্ক (ওয়েস্ট) নামে একটি এনজিও চালান। মাডি শর্মার এনজিও এবং দক্ষিণ দিল্লির সফদরজঙ্গ এনক্লেভে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইন্সস্টিটিউট ফর নন-অ্যালাইন্ড স্টাডিজ (আইআইএনএস) যৌথভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এমপিদের ভারত সফর আয়োজন করেছে। সূত্রের খবর, বিদেশি জনপ্রতিনিধিদের বিমান ভাড়া এবং থাকার খরচ যুগিয়েছে আইআইএনএস।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এমপিদের ই-মেলের মাধ্যমে যে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছিল তাতে সাক্ষর ছিল মাডি শর্মার। সেই আমন্ত্রণপত্রে জনপ্রতিনিধিদের ভারত সফরের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানানো হয়। বলা হয়, প্রথমদিন তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করবেন। দ্বিতীয় দিন যাবেন কাশ্মীরে। তৃতীয় দিন তাঁরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাশাপাশি বিদেশি জনপ্রতিনিধিরা দেখা করবেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে।
সূত্রের খবর, মাডি শর্মা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরামর্শদাতা সংস্থা ইউরোপীয়ান ইকনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিটির সদস্য। পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতেও মাডি শর্মার লেখা প্রকাশিত হয়। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের খবর প্রকাশ হয় যে ইপি টুডে ওয়েবসাইটে, সেখানে গত ১৪ ই সেপ্টেম্বর মাডি শর্মার Why demolishing article 370 is both a victory and a challenge for kashmiri women শীর্ষক লেখা প্রকাশিত হয়।
মাডি গ্রুপের কর্ণধার মাডি শর্মার ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে জানা যাচ্ছে, তাঁর ওয়েবসাইটের কথা। যে ওয়েবসাইটে ঢুকলে, বিভিন্ন কাজকর্মের পাশাপাশি জীবন এবং সমাজ সম্পর্কে তাঁর মনোভাব স্পষ্ট হয়। মূলত মহিলাদের অধিকার এবং স্বাধীনতার লক্ষ্যে কাজ করে থাকে এই অলাভজনক সংস্থা বলে জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও রাজনৈতিক লবিংও করে থাকেন মাডি শর্মা।
গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি বেসরকারি প্রতিনিধিদলকে নিয়ে মাডি শর্মা পৌঁছে গিয়েছিলেন মালদ্বীপ। সেখানে পরিদর্শনের পর মালদ্বীপের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিনের শাসন পদ্ধতির কড়া সমালোচনা করেন তাঁরা। যা নিয়ে তীব্র বিতর্কও হয়।
Comments are closed.