বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে হেনস্থা, কোনও ব্যক্তি বিশেষের উদ্দেশে অবমাননাকর শব্দ প্রয়োগের অভিযোগ হামেশাই উঠে থাকে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সাইবার ক্রাইম আইনও রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও লাগাম পড়ানো যাচ্ছে না এই রকম অনলাইন অপরাধে।
ভারতের মতো দেশে এই ধরনের ঘটনা যে কতটা প্রবল আকার ধারণ করেছে, এবং তার হাত থেকে যে দেশের প্রথম সারির মহিলা রাজনৈতিক নেত্রীরাও বাদ যাচ্ছেন না এবার তার একটি উদাহরণ উঠে এল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি রিপোর্টে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত বছর লোকসভা নির্বাচনপর্ব চলাকালীন মার্চ থেকে মে এই তিন মাসে দেশের ৯৫ জন মহিলা নেত্রীকে লক্ষ্য করে ট্যুইটারে প্রায় ১০ লক্ষ অবমাননাকর, অশালীন শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে! গড়ে প্রত্যেকের উদ্দেশে প্রতিদিন ১১৩ টি করে এরকম মানহানিকর শব্দ ব্যবহার হয়েছে।
ওই সময়ে এই ৯৫ জন মহিলা রাজনীতিবিদের উদ্দেশে যে ট্যুইটগুলি করা হয়েছিল, তার ১৩ শতাংশই এরকম অবমাননাকর ও অশালীন। যার মধ্যে রয়েছে মহিলা হওয়ায় বিদ্বেষমূলক কিছু বার্তাও।
এই ধরনের বার্তার ৫৫.৫ শতাংশই আবার করা হয়েছে মুসলিম মহিলাদের উদ্দেশ্য করে। পিছিয়ে পড়া জনজাতি-উপজাতির শ্রেণি থেকে উঠে আসা মহিলাদের উদ্দেশেও তাদের জাত তুলে অবমাননাকর শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে এই নির্বাচনের সময় ট্যুইটারে, যার পরিমাণ প্রায় ৫৯ শতাংশ।
অ্যামনেস্টির রিপোর্ট আরও বলছে, বিজেপির মহিলা নেত্রীদের তুলনায় অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেত্রীদের বেশি আক্রমণ করা হয়েছে। কংগ্রেসের বিভিন্ন নেত্রীর বিরুদ্ধে এই ধরনের অপশব্দ প্রয়োগের পরিমাণ প্রায় ৪৫.৩ শতাংশ। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে তা ৫৬.৭ শতাংশ।
তবে সমীক্ষায় প্রকাশ, ধর্ম, জাতি, বর্ণ, বয়স নির্বিশেষে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মহিলা নেত্রীদেরই এই প্রকার বিদ্বেষমূলক বার্তার শিকার হতে হয়েছে। তাদের উদ্দেশে এই তিন মাসে প্রায় ৭০ লক্ষ ট্যুইট করা হয়।
জানা গিয়েছে, এই বিষয়টি অ্যামনেস্টির তরফে ট্যুইটার কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। জবাবে তারা বলেছেন, অবমাননাকর, অশালীন ব্যবহারের কোনও স্থান নেই তাদের এই মঞ্চে। এই ধরনের ঘটনা যাতে কমানো যায়, তার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
Comments are closed.