Yes Bank Latest News: PMC ব্যাঙ্কের পর এবার সঙ্কটে YES Bank, বেঁধে দেওয়া হল টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক নির্দেশিকা জারি করে আরবিআই ইয়েস ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়েছে। জানানো হয়েছে, আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত আমানতকারীরা ৫০ হাজারের বেশি টাকা তুলতে পারবেন না। এই সিদ্ধান্তের পরই অনেকে পিএমসি ব্যাঙ্কের তুলনা টানছেন। আশঙ্কা ও উদ্বেগ ছড়িয়েছে আমানতকারীদের মধ্যে।
কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত?
কেন রাতারাতি আরবিআই-র এই নির্দেশিকা ?
সব তত্থ জেনে নিন আমাদের এই বিস্তারিত বিশ্লেষণ তথা Yes Bank Latest News-এর মাধ্যমে :
ইয়েস ব্যাঙ্ক পতনের নেপথ্য কারণ
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হঠাৎ করে নয়, প্রায় দু’বছর ধরে ইয়েস ব্যাঙ্কের পরিচালনা ও মূলধনের অবস্থা সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়েছে। বেসরকারি ব্যাঙ্কটির পরিচালনা ও ঋণজনিত সমস্যা তৈরি হচ্ছিল। সেই কারণে ইয়েস ব্যাঙ্কের সিইও-এর পদ থেকে সরানো হয় রানা কাপুরকে।
২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি আরবিআই-এর নির্দেশে রানা কাপুর সিইও-র পদ ছাড়ার পর তাঁর জায়গায় আনা হয় রবনীত গিলকে। তিনি ইয়েস ব্যাঙ্কের দায়িত্ব নিয়ে ব্যাঙ্কের বিপুল অঙ্কের অনাদায়ি ঋণের কথা জানান। এর মধ্যে বারবার লোকসানের মুখে পড়ে এই বেসরকারি ব্যাঙ্কটি।
২০১৯ সালের জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে প্রথম বার আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয় তারা। গত চারটি ত্রৈমাসিকে পর্যাপ্ত লাভই হয়নি ইয়েস ব্যাঙ্কের। এরপর ডিসেম্বরের শেষে আর্থিক পরিসংখ্যান বা ফলাফল আরবিআইকে জানাতে বেশ দেরি করছিল ইয়েস ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্কের পুঁজি সংগ্রহের প্রক্রিয়া বাধার মুখে পড়ছিল। সেই সব সমস্যার কথাই বৃহস্পতিবার তুলে ধরেছে আরবিআই। বৃহস্পতিবার আরবিআই সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায় বলছে, বিগত ছ’মাস ধরে পুঁজি জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়েছে ইয়েস ব্যাঙ্ক।
শুধু তাই নয়, ইয়েস ব্যাঙ্কের তরফে ফাঁপা প্রতিশ্রুতি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। আরবিআই একাধিকবার বেসরকারি ব্যাঙ্কটিকে শক্তিশালী করতে চেষ্টা করেছে। ইয়েস ব্যাঙ্কের তরফে বারবার বলা হয়েছে বিনিয়োকারীদের সঙ্গে তাদের আলাপ-আলোচনা চলছে। শীঘ্রই সুরাহা হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তব হল, বিনিয়োগকারীদের তরফে কোনও সদর্থক বার্তা পায়নি ইয়েস ব্যাঙ্ক।
এই অবস্থায় পুঁজি ঢেলে ইয়েস ব্যাঙ্কের নিয়ন্ত্রণ অন্য সংস্থার হাতে দেওয়ার কথাও শোনা যাচ্ছে। দেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (এসবিআই) আয়ত্তাধীন কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হাতে ইয়েস ব্যাঙ্ক তুলে দেওয়া হতে পারে। কেন্দ্রের প্রাথমিক সম্মতির পর ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ার দরও কিছুটা বেড়েছিল।
কিন্তু ওয়াকিবহাল মহল বলছে, এই মুহূর্তে ইয়েস ব্যাঙ্কের তহবিল-সহ অর্থনৈতিক অবস্থা যা, তাতে অন্য কোনও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা বিশাল হলেও ব্যাঙ্কের বর্তমান তহবিল নিয়ে মূল্যায়ন করে নিতে চাইছে ব্যাঙ্কটি। কিন্তু গ্রাহকরা যদি টাকা তুলে নেন, সে ক্ষেত্রে ভালোভাবে মূল্যায়ন হবে না। তাই প্রায় একমাস সময় ধরে গ্রাহকদের টাকা তোলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ব্যাঙ্কটির আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
ভবিষ্যতে আমানতকারীরা কীভাবে প্রভাবিত হতে পারেন?
কারও কোনও ক্ষতি হবে না, আমানতকারীদের অর্থ সুরক্ষিত আছে। শুক্রবার ইয়েস ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের আশ্বস্ত করে এমনই বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি জানান, আরবিআই-র গভর্নর তাঁকে জানিয়েছেন, ইয়েস ব্যাঙ্কের আমানতকারীদের কোনও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে না।
আরবিআই-র গভর্নর শক্তিকান্ত দাসও জানাচ্ছেন, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের কাছে নির্দিষ্ট স্কিম রয়েছে বেসরকারি ব্যাঙ্কটিকে ঘুরে দাঁড় করানোর জন্য। তিনি বলেন, আরবিআই সবরকম পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য তৈরি।
কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে, এসবিআই ও এলআইসি মিলে ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রায় অর্ধেক অংশীদারী হাতে নিক। এদিকে এলআইসি-র ঘাড়ে ইতিমধ্যেই রয়েছে লোকসানে ডোবা আইডিবিআই ব্যাঙ্কের ভার। এসব জটিলতা কাটিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কী পদক্ষেপ নেয় তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে সবাই।
নির্মলার আশ্বাস, আমানতকারীদের অর্থ সুরক্ষিত আছে, ভয়ের কারণ নেই
Comments are closed.