বন্ধ থাক এনপিআর, তাকে বাদ রাখা হোক জনগণনা থেকে, চিঠি দিলেন দেশের শতাধিক অর্থনীতিবিদ এবং সমাজ বিজ্ঞানী
এনপিআর নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক চলছে। তৃণমূল-সিপিএম কিংবা কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে বন্ধ এনপিআরের কাজ। কিন্তু জনগণনার কাজের সঙ্গেই সমান্তরালভাবে চলার কথা এনপিআর আপডেটের কাজও। ফলে এনপিআর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার প্রভাব কি পড়বে জনগণনার উপরও? এই আশঙ্কার কারণ এই দুই কাজই করবেন একই ব্যক্তি। এই পরিস্থিতিতে এবার সরাসরি এনপিআর আপডেট প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি উঠল।
ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রার বা এনপিআর আপডেট করার কাজ বন্ধ রাখা এবং তাকে জনগণনা থেকে পৃথক করার দাবিতে বিবৃতি প্রকাশ করলেন দেশের প্রথম সারির অর্থনীতিবিদ এবং সমাজ বিজ্ঞানীদের একাংশ।
এনপিআর আপডেটের কাজ নিয়ে জনমানসে প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়েছে। একটা বিশাল অংশের মানুষ মনে করছেন এর ফলে কোনও ব্যক্তিকে ডি ভোটার বা সন্দেহজনক ভোটার হিসেবে চিহ্নিত করতে পারবেন তথ্য নিতে যাওয়া ব্যক্তিরা। এই আশঙ্কা ইতিমধ্যেই গণ অসন্তোষের আকার নিয়েছে এবং এনপিআর বাতিলের দাবি উঠছে। পাশাপাশি এটাও পরিষ্কার নয়, যে বর্তমান চেহারার এনপিআরের মধ্যে দিয়ে কোনও সুবিধা আদৌ পাওয়া যাবে কিনা। দেশের শতাধিক অর্থনীতিবিদ এবং সমাজ বিজ্ঞানীরা বিবৃতির মধ্যে দিয়ে নিজেদের এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলছেন, ২০২১ সালের জনগণনায় সংগ্রহ করা তথ্য যে নিরাপদ হাতে রয়েছে, তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনও পরিস্থিতিতেই যেন তথ্য বেহাত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি না হয় তা দেখতে হবে প্রশাসনকেই।
পাশাপাশি জনগণনার কাজের সঙ্গে যেভাবে এনপিআরের কাজকেও জুড়ে দেওয়া হয়েছে, তাকে ১৯৪৮ সালের জনগণনা আইনের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করা হয়েছে বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে সাক্ষর করেছেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থেকে শুরু করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি, আইএসআই কলকাতা, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপকরা। সাক্ষর করেছেন দেশের প্রথম সারির একাধিক অর্থনীতিবিদ এবং সমাজবিজ্ঞানীও।
জনগণনার মুখোশের আড়ালে যেভাবে এনপিআরকে গুঁজে দেওয়া হয়েছে, তার তীব্র প্রতিবাদের পাশাপাশি দেশের স্বার্থে অতি প্রয়োজনীয় আদমসুমারী প্রক্রিয়াকেও ইচ্ছাকৃত লঘু করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে বিবৃতিতে। জনগণনার মূল মন্ত্র, গোপনীয়তা, এনপিআরের অন্তর্ভুক্তির পর তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বলে বিবৃতিতে আশঙ্কা তাবড় অর্থনীতিবিদ থেকে সমাজ বিজ্ঞানীর।
Comments are closed.