কমপ্লিট লকডাউন মানুন, স্টেজ ৩ তে যাতে না যায় আপ্রাণ চেষ্টা করছি, রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর

হাতজোড় করে অনুরোধ। কখনও সহজ সরল ভাষায় বোঝানো। বারবার রাজ্যবাসীকে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন দয়া করে বাড়িতে থাকুন। বুধবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের দুই সিনিয়র ডাক্তার সুকুমার মুখার্জি ও অভিজিৎ চৌধুরীকে পাশে বসিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, কমপ্লিট লকডাউন না মানা গেলে করোনার থার্ড স্টেজে পৌঁছনো ঠেকানো যাবে না। আগামী ২-৩ সপ্তাহ প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে, বললেন মমতা ব্যানার্জি।
লকডাউনের মধ্যেও কিছু মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে, তাঁরা এই ব্যবস্থাকে খেলাচ্ছলে নিয়েছেন। রাস্তায় ঘোরাঘুরি কিংবা রাস্তায় বসে আড্ডা বা খেলা চলছে অনেক জায়গাতেই। মুখ্যমন্ত্রী এনিয়ে আগেও অসন্তোষ জানিয়েছিলেন। এবার সরাসরি বললেন, কলকাতা ও আশেপাশে দেখতে পাচ্ছি অনেকেই রাস্তায় ঘুরছেন, রাস্তায় বসে আড্ডা মারছেন, এসব বন্ধ করুন।
মমতার কথায়, যাতে থার্ড স্টেজে না পৌঁছোই তাই লকডাউন করা হয়েছে। যেভাবে হোক একে পুরোপুরি সফল করতেই হবে। এরপরই হাতজোড় করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাড়ির মেয়ের মতো অনুরোধ করছি, আড্ডা মারার অনেক সুযোগ পাবেন। দয়া করে এই কটা দিন বাড়িতে থাকুন। জানি সব সময় বাড়িতে থাকতে ইচ্ছে করে না কিন্তু এছাড়া এখন আর কোনও উপায় নেই।
সম্প্রতি রাজ্যের একটি সরকারি হাসপাতালে প্রোটেকটিভ গিয়ার বা মাস্ক, স্যানিটাইজার বা পিপিই না পাওয়ার অভিযোগে প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়েছেন একাধিক স্বাস্থ্য কর্মী। সেই ঘটনা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের হাসপাতালগুলোকে ১ লক্ষ ১১ হাজার ৩৯৪ পিপিই, ৪২ হাজার ২৯৬ টি এন 95 মাস্ক, ১ লক্ষ ৭ হাজার টু লেয়ার মাস্ক, ১৮ হাজার ৩৬৩ লিটার স্যানিটাইজার এবং ৩,২০০ থার্মাল গান ইতিমধ্যেই দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরেও যা পাওয়া যাবে, সবই হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি জানান, রাজ্য বিশাল কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বড় বড় কাজে একটু আধটু ভুল হতেই পারে। ভুল না হলে হ শেখা যায় না। মমতার কথায়, যে কাজ করে না তার কোনও ভুল হয় না।
গ্রাম-বাংলার বাসিন্দাদের জন্যও এদিন নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, আপনার সামান্য একটা ভুলে যেমন আপনার গোটা পরিবার শেষ হয়ে যেতে পারে। আবার আপনার একটা কাজ পুরো পরিবারকে বাঁচিয়েও দিতে পারে। তাই সাবধান থাকাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান মমতা ব্যানার্জি।
রাজ্যের তৈরি করা জরুরি ত্রাণ তহবিলে অর্থ সাহায্য করা কয়েকজনের নামও এদিন বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আপনি যে সাহায্য করছেন, সেটাই বড় কথা। কত টাকা দিতে পারছেন, তা নয়। আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ এভাবে পাশে থাকার জন্য।
নিজামুদ্দিন কাণ্ড নিয়েও এদিন মুখ খোলেন মমতা। কেন্দ্রের পাঠানো একটি চিঠিকে উদ্ধৃত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে চিঠি দিয়ে রাজ্যকে জানানো হয়েছে দেশে করোনাভাইরাস নেই। এদিকে নিজামুদ্দিন থেকে আসা রাজ্যের বাসিন্দা এবং বিদেশিদের কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর কাজও শেষের পথে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Comments are closed.