লকডাউনের জেরে অভিবাসী শ্রমিকদের আটকে পড়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন মহুয়া মৈত্রের, স্বতঃপ্রণোদিত মামলা আদালতের
লকডাউনে আটকে পড়া অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের আবেদনের প্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদেকে পাঠানো মহুয়ার চিঠির প্রেক্ষিতে শুক্রবার সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহেতাকে সংশ্লিষ্ট পিটিশনের একটি কপি পাঠানোর নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
করোনা সংক্রমণ রুখতে গত ২৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লকডাউন ঘোষণার পর বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়েন লক্ষ লক্ষ অভিবাসী শ্রমিক ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মী। লকডাউনের প্রেক্ষিতে তাঁরা না পারছেন বাড়ি ফিরতে, না পারছেন সুষ্ঠু আশ্রয়ে থাকতে। অভিবাসী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের এই দুর্দশা ও সমস্যা নিয়ে গত ৩১ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে জরুরিকালীন পিটিশন দাখিল করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
আবেদনে তিনি জানান, ২৪ মার্চ আচমকা লকডাউন ঘোষণার পর প্রচুর প্রান্তিক মানুষ অসুবিধায় পড়েছে। লকডাউনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কারও কোনও প্রশ্ন নেই তবে, এর ফলে প্রচুর মানুষ, বিশেষতঃ অভিবাসী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার চরম অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন। মহুয়া আরও জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রায় ৩০০ আবেদন পেয়েছেন এমন মানুষজনের থেকে, যাঁরা ভিন রাজ্যে আটকে আছেন। বাড়ি থেকে কয়েক’শো কিলোমিটার দূরে কেরল, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, দিল্লি, গুরুগ্রাম ইত্যাদি জায়গার আটকে থাকা এই শ্রমিক ও কর্মীদের কয়েকটি বার্তাও প্রধান বিচারপতিকে দেওয়া চিঠির সঙ্গে আটকে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। জানান, এই শ্রমিক ও কর্মীদের বহুজন আবাসন তৈরির কাজে যুক্ত, কেউ ফ্যাক্টরিতে কাজ করার জন্য বাড়ি থেকে কয়েক’শো কিলোমিটার দূরে গিয়ে অতি দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। কেউ কেউ প্রাণ হারিয়েছে। আটকে থাকা শ্রমিক ও মৃত শ্রমিকদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলিকে কার্যকরী পদক্ষেও করতে নির্দেশ দিক সুপ্রিম কোর্ট। চিঠিতে এমনই আবেদন করেন মহুয়া মৈত্র।
সেই সঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিক, কর্মীদের মজুরি, বেতন যেন সংস্থাগুলি দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে, তাঁদের খাবার ও আশ্রয়েরও যেন ব্যবস্থা করা হয়, তার জন্য আবেদন রাখেন তিনি। পিটিশনে তিনি জানান, শীঘ্রই এই মানুষগুলোকে সাহায্য না করলে, আরও হাজারের বেশি মানুষ হয়ত প্রাণ হারাবেন এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যাবে।
শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও ও বিচারপতি দীপক গুপ্তা সলিসিটার জেনারেলকে পিটিশনের একটি কপি পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ৭ এপ্রিল।
Comments are closed.