দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পর বিহারে বিরোধী মহাজোটের আসন রফা চূড়ান্ত হওয়ার পথে। সূত্রের খবর, আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের মধ্যে আলোচনা একেবারে শেষ লগ্নে পৌঁছেছে। তেজস্বী যাদবের আরজেডি ১৩৮ টি, কংগ্রেস ৬৮ টি এবং বামেরা ২৯ টি আসনে লড়বে। এখন আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা। নজর রাখা হচ্ছে এনডিএর অন্দরের হালচালের উপরেও।
বিহারে নীতীশ-বিজেপি জোটের বিরুদ্ধে মহাগটবন্ধন বা মহাজোটের আসন সমঝোতা নিয়ে তিন পক্ষে বেশ কিছুদিন ধরেই আলাপ আলোচনা চলছিল। সূত্রের খবর, এবার তা চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছেছে। কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট সনিয়া গান্ধী যেদিন মোদী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তীক্ষ্ণ আক্রমণ শানালেন, মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে বিহারে বিরোধী মহাজোটের আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেল।
সূত্রের খবর, আরজেডি ৬৮-৭০ টি সিট কংগ্রেসকে ছাড়তে সম্মত হয়েছে। ২০১৫ সালে কংগ্রেস ৪১ টি সিটে লড়ে ২৭ টিতে জয় পেয়েছিল।
বিহারের বাম দলগুলোর সূত্রে যে খবর পাওয়া গিয়েছে তাতে বামেরা এবার ২৯ টি আসনে মহাজোট প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন। বিহারে সবচেয়ে বড়ো বাম দল সিপিআইএমএল লিবারেশন। দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের দলকে ১৯ টি আসন ছাড়া হচ্ছে বলে খবর। গতবার সিপিআইএমএল লিবারেশনের ৩ জন বিধায়ক ছিলেন। CPI লড়বে ৬ টি আসনে। CPIM লড়াই করবে ৪ টি আসনে।
১৩৮ টির মতো আসনে লড়বে আরজেডি। তবে মুকেশ সাহানির বিকাশশীল ইনসান পার্টিকে (VIP) ৬ টি আসন ছাড়তে পারেন তেজস্বী। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাকেও গোটা দুয়েক আসন ছাড়া হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। জয়ের সম্ভাবনার নিরিখে কিছু আসন এদিক ওদিক হতে পারে।
শুক্রবার সিপিআই এমএল লিবারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি দীপঙ্কর ভট্টাচার্য ও পার্টির বিহারের রাজ্য সম্পাদক কুণাল রাষ্ট্রীয় জনতা দলের তেজস্বী যাদবের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক দু’তরফে আসন সমঝোতা নিয়ে কথা হয়। বৈঠক সেরে বেরিয়ে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য জানান, ভালো মিটিং হয়েছে। তাঁরা ২০ টি আসন প্রত্যাশা করেন। আরজেডি এখনও পর্যন্ত ১৫ টি দিতে সম্মত হয়েছে। আরও আলোচনা হবে।
রাষ্ট্রীয় জনতা দলের মুখপাত্র মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি বলেন, কংগ্রেস ও বাম দলগুলোর সঙ্গে আমাদের আসন নিয়ে আলোচনা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যেই তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে দেওয়া হবে।
মহাজোটের কাণ্ডারিরা সতর্ক নজর রাখছেন এনডিএর উপর। আসন সমঝোতা করতে গিয়ে কার্যত নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে দিল্লির নেতাদের। রামবিলাস পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি আসন নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে। শনিবার এলজেপির পার্লামেন্টারি বোর্ডের মিটিং। সেই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে বিরোধীরা। মহাজোটের নেতারা মনে করছেন, রামবিলাস দীর্ঘদিন ধরে ভারতের রাজনীতিতে হাওয়া মোরগের ভূমিকা পালন করছেন। তাই হাওয়া বুঝে তিনি এনডিএ ছেড়ে দিলে অনেক জায়গাতেই খেলা অন্যরকম হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তার পুরো ডিভিডেন্ড ধরে তুলতে পারবে মহাজোট। সকলের নজর এখন রামবিলাসের পার্টির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের দিকে।
Comments are closed.