দেশে চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এই অবস্থায় জলপাইগুড়ির সভা থেকে সরাসরি বিজেপিকে করোনা ছড়ানোর জন্য দায়ী করেছেন মমতা। সম্প্রতি প্রায় প্রতিটি সভা থেকে মমতা ব্যানার্জি অভিযোগ করছেন গুজরাতের বিজেপি অফিস থেকে ওষুধ বিলোনোর। জানেন সত্যি কী হয়েছিল? কেন মমতা ব্যানার্জি বলছেন গুজরাতের বিজেপি সভাপতির ওষুধ বিলোনোর কথা?
সোমবার ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত হয় একটি বিস্ফোরক প্রতিবেদন। সেখানে দাবি করা হয়, করোনা সংক্রমণে যখন ভয়াবহ অবস্থা গুজরাতের, হাসপাতালে বেড নেই, কালো বাজার ছাড়া মিলছে না রেমডেসিভির তখন গুজরাটে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সি আর পাটিল পাঁচ হাজার রেমডিসিভির বিলি করছেন!
প্রতিবেদন অনুযায়ী, যে ওষুধ কেবল মাত্র কালোবাজারে মিলছে আকাশ ছোঁয়া দামে সেই রেমডেসিভির বিনামূল্যে বিলি করছে বিজেপি। উদ্যোগের নেপথ্যে গুজরাতের বিজেপি সভাপতি সি আর পাটিল।
কিন্তু অতিমারি চলাকালীন রাজনৈতিক দলের অফিস থেকে জীবনদায়ী ওষুধ বিলি করা যায়? প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এই প্রশ্নের জবাবে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি বলেছেন, যাঁর বিরুদ্ধে প্রশ্ন, তাঁকেই জিজ্ঞেস করুন। এরপরই নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে মোদীর রাজ্যে।
একটি স্থানীয় সংবাদপত্র দিব্য ভাস্কর খবরের কাগজের প্রথম পাতায় বড় বড় হরফে সি আর পাটিলের মোবাইল নম্বর ছাপিয়ে দেয়। গুজরাতি ভাষায় সেখানে লেখা ছিল, ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে যেখানে মানুষ রেমডেসিভির ইনজেকশন পাচ্ছেন না সেখানে বিজেপি সভাপতি সি আর পাটিল ৫ হাজার ইনজেকশন পেলেন কোথা থেকে? হেডলাইন ছিল, সরকারকে জবাব দিতেই হবে।
এদিকে গুজরাতের বিজেপি সভাপতি সুরাতের পার্টি অফিস থেকে ওষুধ বিলির ছবি ফলাও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছেন।
ભારતીય જનતા પાર્ટી સુરત મહાનગરનાં ઉપક્રમે ભાજપ કાર્યાલય ઉધના ખાતેથી આજે રેમડેસિવીરનું વિના મૂલ્યે વિતરણ શરૂ કરાયું.
ઇન્જેક્શન મેળવવા માટે કોરોનાનો રિપોર્ટ અને ડોક્ટરનું પ્રિસ્ક્રીપ્શન સાથે લાવવું જરૂરી છે. pic.twitter.com/DNop5F76Wf
— C R Paatil (@CRPaatil) April 10, 2021
কোভিড সংক্রমিত রোগীদের জন্য এই ওষুধ কেবলমাত্র হাসপাতালে এবং ওষুধের দোকানে বিক্রি হয়। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া এই ওষুধ বিক্রি করা বেআইনি। এই অবস্থায় ওষুধ নির্মাণকারি সংস্থা Zydus Cadila ৫ এপ্রিল থেকে তাদের দুটি হাসপাতাল থেকে ভর্তুকিতে রেমডিসিভির ইঞ্জেকশন বিক্রি করছিল। শুক্রবারই Zydus Cadila তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ওষুধের স্টক শেষ। অভিযোগ, সেই সময় ওষুধ নিয়ে বাজারে নামেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সি আর পাটিল।
এখন প্রশ্ন হল, এই আকালের বাজারে সি আর পাটিল এত ওষুধ পেলেন কোথায়? ওষুধ নিয়ে যখন গুজরাত জুড়ে হাহাকার তখন কেনই বা শুধু মাত্র বিজেপির পার্টি অফিস থেকে ওষুধ বিলি হবে? সি আর পাটিল অবশ্য বিতর্কের পর থেকেই বেপাত্তা। তিনি জানিয়েছেন, কয়েকজন বন্ধুর সহায়তায় তিনি ৫ হাজার রেমডেসিভির ইনজেকশন জোগাড় করেছিলেন। সেই ওষুধই দৈনিক ভিত্তিতে বিলি করেছে তাঁর অনুগামীরা। এর মধ্যে অন্যায়ের কিছু দেখছেন না গুজরাতের বিজেপি সভাপতি সি আর পাটিল।
কিন্তু এই ঘটনা নিয়েই এখন তোলপাড় দেশ। মহামারি চলাকালীন একটি রাজনৈতিক দলের অফিস থেকে কীভাবে জীবনদায়ী ওষুধ বিলি হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বঙ্গ ভোটেও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি রোজ এই কাণ্ডের কোথা তুলছেন। গুজরাতে কোভিডের ভয়াবহতা নিয়ে মুখ খুলেছেন বাম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমও।
Comments are closed.