সাইবার অপরাধের শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথই বেছে নিচ্ছেন কিশোর-কিশোরী এবং যুব সমাজ। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সোয়ানসি ইউনিভার্সিটির একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২৫ বছরের কম বয়সী ছেলে-মেয়েরা সাইবার হেনস্থার কারণে যত বেশি নিজের শারীরিক ক্ষতি করছে, তার থেকে প্রায় দ্বিগুণ হারে তাদের মধ্যে বাড়ছে আত্মহত্যার করার প্রবণতা। সাইবার অপরাধ হল এমন এক ধরনের অপরাধ যেখানে বৈদ্যুতিন মাধ্যমকে ব্যবহার করে কোনও ব্যাক্তিকে আপত্তিকর ভাষায় মেসেজ পাঠানো ও তার ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ্যে এনে তাকে হেনস্থা করা হয়। গবেষক অ্যান জন এর নেতৃত্বে বিশ্বের ৩০ টি দেশের ২১ বছরের ওপর মোট ১৫,০০০০ যুবক-যুবতীকে নিয়ে করা এই সমীক্ষায় দেখা গেছে,সাইবার হেনস্থার ফলে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে গভীর মানসিক প্রভাব পড়েছে। যা যথেষ্টই উদ্বেগের বিষয়। অ্যান জন এর মতে, ‘সাইবার হেনস্থার ফলে আত্মহত্যার মতো ঘটনা এড়াতে প্রতিটি স্কুলেই ছাত্র-ছাত্রী ও কর্মচারীদের নিয়ে সাইবার অপরাধ বিরোধী কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে, পাশাপাশি সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত সচেতনতার প্রসার ঘটাতে হবে’।
সাইবার হেনস্থার হাত থেকে রক্ষা পেতে কতগুলি সুপারিশ গ্রহণ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে আইনপ্রনেতাদের সাইবার অপরাধ বিরোধী নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে। পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যে শিশু অথবা যুবক-যুবতী সাইবার হেনস্থার ঘটনায় অভিযুক্ত, তাদের মানসিক চিকিৎসা করানো অত্যন্ত জরুরি। স্কুলে,বাড়িতে এই বিষয়ে অভিভাবক এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সচেতন থাকতে হবে। এই সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে,সাইবার হেনস্থায় মহিলাদের তুলনায় বেশি পুরুষেরা মানসিক অবসাদের শিকার হচ্ছেন এবং আত্মহত্যা করেছেন। ভারতেও এই ধরনের ঘটনা একেবারেই কম নয়। ব্ল হোয়েল গেম খেলতে গিয়ে মুম্বইতে কিছুদিন আগে ১৪ বছরের এক কিশোর আত্মহত্যা করে। চেন্নাইয়ে ১৭ বছরের এক কিশোরী শুধুমাত্র আনন্দ পাওয়ার জন্য হাতের শিরা কেটেছিল। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে ২০১৫ সালে ১৫৭৭৭ টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে তামিলনাডুতে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর ২০১৬-১৭ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৯৮০টি সাইবার মাধ্যমে যৌন নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে শির্ষে মুম্বই। এছাড়া সাইবার ক্রাইমে প্রথম পাঁচটি রাজ্য হল যথাক্রমে,উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, রাজস্থান এবং অসম। পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে তালিকায় আট নম্বরে। উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি এই তালিকায় নীচের দিকেই রয়েছে।