বাংলার গরিব মানুষের বাড়ি তৈরির টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে প্রান্তিক মানুষকে পাকা বাড়ি নির্মাণের টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ডিসেম্বর মাসে টাকা পাঠানো শুরু হবে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে। উপভোক্তা তালিকা চূড়ান্ত করতে রাজ্যজুড়ে চলছে সমীক্ষা। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিলেন, কেন্দ্রের আরোপিত অমানবিক শর্ত মেনে তালিকা থেকে উপভোক্তাদের নাম বাদ দেওয়ার বিপক্ষে তিনি। তাই মঙ্গলবার নবান্নের বৈঠকে তাঁর নির্দেশ, শর্তের চাপে যেভাবে কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে অকারণে মানুষের নাম বাদ যায়, রাজ্যের প্রকল্পের ক্ষেত্রে তা যেন না হয়। আইন মেনে সব কাজ করতে হবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, তা করতে গিয়ে মানবিকতা যেন উপেক্ষিত না হয়।
গোটা রাজ্যে এখন চলছে আবাসের সমীক্ষা। পুরনো তালিকায় থাকা ৩৬ লক্ষ উপভোক্তার মধ্যে কতজন এখনও বাড়ি তৈরির টাকা পাওয়ার উপযুক্ত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মঙ্গলবার কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, কৃষিসচিব ওঙ্কার সিং মিনা এবং পঞ্চায়েত সচিব পি উল্গানাথনকে নিয়ে বৈঠক করেন মমতা। সেখানে তাঁর ওই নির্দেশের পর নড়েচড়ে বসে পঞ্চায়েত দপ্তর। এখনও পর্যন্ত ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার ক্ষেত্রে যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে।
এর মধ্যে ২১.৪৩ শতাংশের নাম বাদের তালিকায় রয়েছে প্রাথমিকভাবে। ঠিক হয়েছে, চূড়ান্ত তালিকা থেকে এই নামগুলি বাদ দেওয়ার আগে অভিজ্ঞ আধিকারিকদের দিয়ে পুনরায় যাচাই করানো হবে। বাড়িতে তিন বা চার চাকার মোটরগাড়ি, তিন বা চার চাকার কৃষি সরঞ্জাম থাকলে, পরিবারে কোনও সরকারি কর্মচারী বা মাসে ১৫ হাজার টাকা উপার্জন করা কোনও সদস্য বা আয়কর দেন এমন কোনও সদস্য থাকলে বা আড়াই একরের বেশি চাষযোগ্য জমি থাকলে এই প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া যাবে না। এমন মোট ১০টি শর্ত রয়েছে রাজ্যের ‘এসওপি’-তে। তারপরও মুখ্যমন্ত্রীর ‘মানবিক অভিমুখ’ সংক্রান্ত বার্তা মাথায় রেখে পুনরায় যাচাই হবে। প্রসঙ্গত, আবাস প্রকল্প থেকে নাম বাদ পড়ার খবর ছড়াতেই একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের বার্তায় সেই বিক্ষোভ কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে বলে আশা পদস্থ কর্তাদের।
Comments are closed.