ছুটি চেয়েও মেলেনি, অন্ধ্রের স্কুলেই গর্ভপাত, মৃত্যু অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকার, স্কুলের বিরুদ্ধে নির্মমতার অভিযোগ
অসুস্থতার কথা জানিয়ে স্কুলে ছুটি চেয়েছিলেন। কিন্তু ছুটি পাননি অন্তঃসত্ত্বা সুধারানি। অসুস্থ শরীরে গেলেও, ওয়ার্কশপ চলাকালীনই মৃত্যু হল তাঁর।
স্কুল থেকে বলা হয়েছিল, শরীর যতই অসুস্থ থাক, ওয়ার্কশপের গরহাজির থাকলে চাকরি নিয়ে টানাটানি হবে। তা শুনেই ভয় পেয়েছিলেন সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী অন্ধ্র প্রদেশের কুর্নুল জেলার স্কুল শিক্ষিকা বছর ৩২-এর সুধারানি। অসুস্থতা নিয়েই স্কুলের ওয়ার্কশপে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু আচমকাই ওয়ার্কশপের মাঝে জ্ঞান হারান সুধারানি। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। রক্তে ভেসে যায় চারপাশ। সহকর্মীরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হল না। অতিরিক্ত রক্তপাতের জেরে পেটে থাকা সন্তানের মৃত্যু হয়েছিল আগেই, এবার জীবনের মায়া ত্যাগ করলেন সুধারানিও।
ঘটনাটি ঘটেছে কুর্নুলের অনন্তপুরে, শ্রীচৈতন্য স্কুলে হিন্দির শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করতেন ৩২-এর সুধারানি। পরিবারে তিনিই একমাত্র উপার্জনকারী। তাঁর উপরেই স্বামী ও এক সন্তানের দায়িত্ব। ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সুধারানি আগেই স্কুলে জানিয়েছিলেন, শারীরিক অসুস্থতার জন্য স্কুলের ওয়ার্কশপে যোগ দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। পাল্টা স্কুল থেকে সাফ জানানো হয়, ওয়ার্কশপ না করলে চাকরি যাবে। তারপর আর ঝুঁকি নেওয়ার সাহস পাননি সুধারানি। শারীরিক অসুস্থতা নিয়েই স্কুলে যান তিনি। তারপর ঘটে মর্মান্তিক ঘটনা।
ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় শিক্ষকদের সংগঠন। প্রাইভেট টিচারস অ্যান্ড লেকচারার্স ইউনিয়নের তরফে চাঁদ বাশার অভিযোগ, অসুস্থতার কথা জানানো সত্ত্বেও চাকরি যাওয়ার হুমকি দিয়ে সুধারানিকে স্কুলে ডেকে আনা হয়। সংগঠনের দাবি, মৃত্যুর পর গোপনে স্কুল কর্তৃপক্ষ সুধারানির দেহ তাঁর গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। স্কুলে যখন গরমের ছুটি চলছে, সেই সময় এমন ওয়ার্কশপ কেন করানো হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে পিটিএলইউ। সংগঠনের অভিযোগে ভিত্তিতে জেলা তথ্য আধিকারিকের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন অন্ধ্র প্রদেশ মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন।
Comments are closed.