জলপাইগুড়িতে দুর্ঘটনার ভিডিও ব্যবহার করে ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর বাংলাদেশি- রোহিঙ্গা হামলার মিথ্যে প্রচার

‘পশ্চিমবঙ্গ এখন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী (সন্ত্রাসবাদী) এবং রোহিঙ্গাদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি এমনই যে তাদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না কেন্দ্রীয় বাহিনীও। এই ভিডিওটি দ্রুত নির্বাচন কমিশনের কাছে পৌঁছে দিতে বেশি বেশি করে শেয়ার করুন’।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বার্তা সম্বলিত একটি ভিডিও ঘুরছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি গাড়িতে বসে কয়েকজন রক্তাক্ত জওয়ান। চারপাশ থেকে গাড়ি ঘিরে ধরে চলছে ব্যাপক গোলমাল। তারপর একটি পুলিশের গাড়িতেও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিওটি সম্পর্কে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী এবং রোহিঙ্গারা জলপাইগুড়ি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ভর্তি গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় পুলিশ তাদের রুখতে পারছে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল। সত্যিই কি লোকসভা ভোটের সময় জলপাইগুড়িতে এমন কাণ্ড ঘটেছে?

সর্বভারতীয় নিউজ পোর্টাল, altnews.in এর ফ্যাক্ট চেকিংয়ে বেরিয়ে এসেছে সত্য। altnews.in এর ফ্যাক্ট চেকিং থেকে জানা যাচ্ছে, ঘটনাটি জলপাইগুড়ি জেলার ফাটাপুকুরে হওয়া একটি পথ দুর্ঘটনার পরের ছবি। altnews.in জানাচ্ছে, ফাটাপুকুর এলাকায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর একটি দ্রুতগামী লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে দুই ব্যক্তিকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের। অভিযোগ, পুলিশকে খবর দেওয়া সত্ত্বেও তারা দেরি করে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ আসতেই গ্রামবাসীদের রাগ গিয়ে পড়ে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের উপর। বেধড়ক মারধর করা হয় সিভিক ভলেন্টিয়ারদের, ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের গাড়িতে। বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেই সময় দুর্ঘটনার খবরটি প্রকাশ করেছিল স্থানীয় নিউজ পোর্টাল নিউজ বৃত্তান্ত। সেই ভিডিও তুলে ধরেই সোশ্যাল সাইটে দাবি করা হচ্ছে, রোহিঙ্গা এবং সন্ত্রাসবাদীদের দাপটের কাছে অসহায় রাজ্য পুলিশ এবং আক্রান্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী।
স্থানীয় নিউজ পোর্টাল নিউজ বৃত্তান্ত ছাড়াও স্থানীয় রাজগঞ্জ থানার সঙ্গেও যোগাযোগ করে altnews.in। সেখান থেকেও জানানো হয়, এই ঘটনার সঙ্গে লোকসভা ভোট কিংবা কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও যোগ নেই এবং জনরোষে আক্রান্ত হয়েছেন রাজগঞ্জ থানার সিভিক ভলেন্টিয়াররা। কিন্তু এই ভিডিওকেই কৌশলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর রোহিঙ্গাদের হামলা বলে চালানো হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মনগড়া ধর্মীয় উসকানিমূলক কথা লিখে দেদারে তা শেয়ার করছেন ‘চৌকিদার’রা।

Comments are closed.