সিপিএমের সঙ্গে আসন সমঝোতা ভেস্তে দিয়ে বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে কংগ্রেসের মধ্যে একটা দালাল চক্র কাজ করছে: মহম্মদ সেলিম
সিপিএমের সঙ্গে রাজ্যে আসন সমঝোতা ভেস্তে দিতে কংগ্রেসের মধ্যে একটা দালাল চক্র সক্রিয় হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য চারমুখী লড়াইয়ের পরিবেশ তৈরি করে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য তথা সাংসদ মহম্মদ সেলিম।
নিজেদের জেতা আসনে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দিয়ে, কংগ্রেসের প্রতি ইতিবাচক আসন সমঝোতার বার্তা দিয়েছিল সিপিএম। রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ ঠেকাতে গতবার কংগ্রেসের জেতা ৪ টি আসনের বাইরেও, বেশ কিছু সিট তাদের ছাড়তে রাজি আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। কিন্তু কোন কোন আসন কংগেস চায় তা নিয়ে চূড়ান্ত ঐক্যমত না হওয়ায়, নির্বাচন ঘোষণার পরেও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা নিয়ে অপেক্ষা করে বামেরা। তাতেও এই সমস্যার রফা সূত্র না মেলায়, গত শুক্রবার প্রথম দফায় ২৫ জনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেয় সিপিএম। বাকি ১৭ টি আসনের মধ্যে অন্তত ৬/৭ টি আসনে প্রার্থী দিতে চায় বামেরা। কিন্তু কংগ্রেস নিজেদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে না পারায়, রাজ্যের বাকি ১৭ টি আসনই দাবি করে বলে সূত্রের খবর। আর এখানে দাঁড়িয়েই হঠাৎ করে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে সিপিএম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতার প্রক্রিয়া।
সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য ও সাংসদ মহম্মদ সেলিমের অভিযোগ, প্রথম দিন থেকেই কংগ্রেসের ভেতরে একটা চক্র সক্রিয়, যারা চায় না তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী ভোট এক বাক্সে পড়ুক। এই দালাল চক্র ফের সক্রিয় হয়েছে, এক বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে। তাদের লক্ষ্য বিরোধী ভোট ভাগ করে বিজেপির সুবিধা করে দেওয়া।
২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের আসন সমঝোতার ফলে রাজ্যে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ২০১৪ সালের তুলনায় অনেকটাই কমানো গিয়েছিল। ২০১৮ সালে সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনেও এই আসন সমঝোতার পক্ষে সওয়াল করে বক্তব্য পেশ করেছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। সিপিএমের বক্তব্য, বিরোধী ভোট যত ভাগ হবে ততই সুবিধা পাবে বিজেপি। আর সেই কারণেই কংগ্রেসের থেকে তাদের ভোট বেশি আছে এমন বহু কেন্দ্রে তারা নিজেদের প্রার্থী না দিয়ে, শুধু বিজেপিকে ঠেকাতে কংগ্রেসকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ অকারণ জেদ করে বিজেপির সুবিধা করে দিচ্ছে।
সূত্রের খবর, রাজ্যে ৪২ টি আসনেই প্রার্থী দিতে চেয়ে হাই কমান্ডের কাছে দরবার শুরু করেছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেই বল এখন পুরোপুরি রাহুল গান্ধীর কোর্টে। কংগ্রেসের এই আচরণে ক্ষুব্ধ সিপিএম।
তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, বিহার প্রভৃতি রাজ্যে বিজেপিকে ঠেকাতে বামেরা যখন নিজেদের আসন ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে তখন, এরাজ্যে বিজেপিকে সুবিধা করে দিচ্ছে কংগ্রেস। তবে সিপিএম নেতৃত্ব এখনও আশাবাদী সমঝোতা প্রক্রিয়া পুরোপুরি ভেস্তে যায়নি। বৃহত্তর স্বার্থে অযথা জেদাজেদি ছেড়ে শেষপর্যন্ত বিজেপি ও তৃণমূলকে সুবিধা করে দেওয়া হবে না বলেই মনে করছে বাম শিবির।