বিমানবন্দর বেসরকারিকরণে লাভ কমেছে ৩০ শতাংশ, এই যুক্তিতে ৬ টি বিমানবন্দর আদানিদের দেওয়ার বিরোধিতায় আন্দোলন

বিমানবন্দর বেসরকারিকরণের দ্বিতীয় ধাপে চূড়ান্ত সবুজ সঙ্কেত দিতে চলেছে মোদী সরকার। দেশের ৬ টি বিমানবন্দরের পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের বরাত পেয়েছে আদানি গোষ্ঠী। এবার বিমানবন্দর বেসরকারিকরণের সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামল এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এএআই) র কর্মী ও আধিকারিকদের যৌথ মঞ্চ। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী হরদীপ পুরিকে একটি চিঠি দিয়েছেন তাঁরা।

এয়ারপোর্টস অথরিটি এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক বলরাজ সিংহ অহলাওয়াতের অভিযোগ, বেসরকারিকরণের আগে এএআইয়ের আয়ের ৬০ শতাংশই আসত দিল্লি এবং মুম্বই বিমানবন্দর থেকে। কিন্তু বেসরকারিকরণের পর এই দুই এয়ারপোর্ট থেকে এএআইয়ের মোট আয়ের মাত্র ৩০ শতাংশ আসছে। তিনি আরও বলেন, তথ্য বলছে ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে সবকটি এয়ারপোর্ট থেকে এএআইয়ের মোট আয় হয়েছিল ১২,৫৪২ কোটি টাকা। তার মধ্যে দিল্লি ও মুম্বই থেকে মাত্র ৩,৮৩৬ কোটি।

আহমেদাবাদ, জয়পুর, লখনউ, গুয়াহাটি, ম্যাঙ্গালুরু এবং তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দর রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনার ভার বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। এই উদ্দেশে ডাকা টেন্ডারের বরাত পেয়েছে নরেন্দ্র মোদী ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থা।

অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে এএআইয়ের যৌথ মঞ্চ উল্লেখ করছে আগেই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া দিল্লি ও মুম্বই বিমানবন্দরের কথা। চিঠিতে যৌথ মঞ্চ লিখেছে, বেসরকারিকরণ দেশের জন্য মোটেও ভাল কিছু নয়। অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, এর ফলে মানুষের সুযোগ সুবিধা কমেছে, সমাজে কর্মসংস্থান প্রায় কিছুই হয়নি এবং সর্বোপরি এর মাধ্যমে একটি একচেটিয়া প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। স্বভাবতই কর্মীদের শোষণ বাড়ছে পাল্লা দিয়ে মাত্রা ছাড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের দুর্দশা, সর্বক্ষেত্রে তাদের অতিরিক্ত খরচ করাতে বাধ্য করা হচ্ছে।

২০১৮ সালে নভেম্বরে মোদী সরকার দ্বিতীয় ধাপে বিমানবন্দর বেসরকারিকরণের প্রক্রিয়া শুরু করে। সেই সময় থেকেই এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতায় সরব হয়েছিল এএআইয়ের যৌথ মঞ্চ। প্রতিটি এয়ারপোর্টের সামনে লাগাতার বিক্ষোভ এবং বিরোধ প্রদর্শন করেছেন এএআই কর্মী, আধিকারিকরা। কিন্তু সরকার তাতে কান দেয়নি। অহলাওয়াতের আশঙ্কা, বর্তমানে লাভে চলা ৬ টি বিমানবন্দরকেও দিল্লি-মুম্বই বিমানবন্দরের ছকেই ঢোকানো হবে। এতে বেসরকারি সংস্থার লাভ লাফিয়ে বাড়লেও আখেরে লাভ কমবে এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার এবং এর ফলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন লক্ষ লক্ষ কর্মী এবং সাধারণ মানুষ।

Comments are closed.