নীল টিশার্ট, কালো প্যান্ট, গাল ভর্তি দাড়ি। পেপার বিছিয়ে ফুটপাতে শুয়ে। সঙ্গে রয়েছে জলের বোতল, দুটি মোবাইল ফোন, একটি নীল রংয়ের টুপি, যাতে মমতা ব্যানার্জির ছবি দেওয়া। মাথার পাশে রাখা পেপার কাটিং টিও বেশ অর্থপূর্ণ। গাড়িতে বসে যন্ত্রনা কাতর মুখ্যমন্ত্রী। এসএসকেএম চত্বরে গেলে দেখা মিলবে এই দৃশ্যের। লোকটির নাম অর্জুন সর্দার। না, তিনি কোনও তৃণমূল সমর্থক নন। তবে কলকাতায় মমতা ব্যানার্জির যেকোনও কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যায়। তিনি তৃণমূল নেত্রীর অনুরাগী। তাঁর প্রিয় নেত্রী এসএসকেএম-এ ভর্তি। তাই তিনিও চলেও এসেছেন। বুধবার রাত থেকেই খোলা আকাশের নীচে রাত, দিন কাটছে অর্জুনের। নেত্রীর সঙ্গেই ফিরবেন। বাড়ির লোক তাঁকে খাওয়ার দাওয়ার দিয়ে যাচ্ছেন, মেয়ে এসে ফোন নিয়ে গিয়ে চার্জ দিয়ে আবার দিয়ে যাচ্ছে। অর্জুন হাসপাতাল চত্বর থেকে নড়েন নি। কালো পিচের রাস্তায় পেপার বিছিয়ে তাতেই ঘুমিয়েছেন।
[আরও পড়ুন- আজই বাড়ি ফিরছেন মমতা, চিকিৎসকদের কাছে কালীঘাট ফেরার ইচ্ছেপ্রকাশ]
বুধবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আহত হওয়ার পর তাঁকে তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীর পাশাপাশি দেখে গিয়েছেন রাজ্যপাল। শুক্রবার তাঁকে দেখতে আসেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। বাংলা ছবির তারকারাও নেত্রীকে দেখতে ভিড় জমিয়েছেন। নেত্রীর আরোগ্য কামনায় রাজ্য জুড়ে পুজো দিয়েছেন তৃণমূল সমর্থকেরা। এমনকী বিজেপি মহিলা মোর্চার নেত্রী অগ্নিমিত্রা পলও আজ পুজো দিয়েছেন। তবে অর্জুনের এই নীরব অবস্থান বিরল। সুরক্ষার ঘেরাটোপে হয়তো তাঁর প্রিয় নেত্রীকে দেখতেও পাননি অর্জুন। তবুও বুধবার রাত থেকেই নিজের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ভর্তি থাকলে একজন যা যা করেন তাই করে গিয়েছেন অর্জুন। তাঁর এই নীরব পাশে থাকা তৃণমূল নেত্রী জানতে পারবেন কিনা তাও অর্জুন জানেন না। অর্জুনের মত মানুষেরা হয়তো এভাবেই আড়ালে থেকে যান।
Comments are closed.