বিশ্বের দরবারে দেশের নাম উজ্জ্বল করলেন বঙ্গতনয়া। আমেরিকার মালোকাই চ্যানেল জয় করলেন কালনার সায়নী দাস। সায়নীই প্রথম মহিলা সাঁতারু যিনি আমেরিকার হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মালোকাই চ্যানেল জয় করলেন। ২৭ মার্চ মালোকাই জয় করতে বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। এপ্রিলেই ভয়ঙ্কর সামুদ্রিক প্রাণী আর বিষাক্ত জেলিফিসদের কাবু করে মালোকাই চ্যানেল জয় করলেন। জয়ের পরেই তিনি জড়িয়ে ধরেন ভারতের পতাকা। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সায়নীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানা যাচ্ছে, ২০২০ সাল থেকে মালোকাই চ্যানেল জয় করার পরিকল্পনা ছিল সায়নীর। করোনার কারণে ভালোভাবে প্র্যাকটিস করা সম্ভব ছিল না। আর মালোকাই চ্যানেল সংস্থাও কোনও উদ্যোগ নেয় নি। কিন্তু নিজের লক্ষ্যে অনড় ছিলেন সায়নী দাস। সাগর থেকে গঙ্গায় কঠোর অনুশীলন করতেন তিনি। করোনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতেই চ্যানেল সংস্থার কাছে সবুজ সংকেত পেয়ে মার্চেই বাবা মাকে সঙ্গে নিয়ে আমেরিকার উদ্দেশ্যে উড়ে যান সায়নী। ২৭ মার্চ কালনার বাড়ি থেকে বেড়িয়ে ২৮ মার্চ কলকাতা বিমানবন্দর থেকে উড়ানে চেপে জাপান হয়ে আমেরিকা পৌঁছান সায়নী।
বর্ধমানের কালনার বারুইপাড়ায় বাসিন্দা সায়নী। বাবা রাধেশ্যাম দাস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মা রুপালি দাস গৃহবধূ। ছোট থেকেই সাঁতারের প্রতি ঝোঁক ছিল সায়নীর। তাই তাঁকে ভর্তি করে দেওয়া হয় সাঁতার কেন্দ্রে। পাড়ার পুকুর হোক বা যেকোনও সুইমিং পুল, অক্লান্ত ভাবে সাঁতার কাটত মেয়ে। জানিয়েছেন সায়নীয় বাবা রাধেশ্যাম দাস। ভবিষ্যতে একজন বড় সাঁতারু হতে তাঁকে উৎসাহ দিতেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর একের পর এক সাঁতার অভিযানে নেমে জয় ছিনিয়ে আনেন তিনি। ২০১৭ সালে জয় করেন ইংলিশ চ্যানেল। ২০১৮ সালে জয় করেন রটনেস্ট চ্যানেল। এরপর ২০১৯ সালে ক্যাটালিনা চ্যানেল জয় করেন।
মালোকাই চ্যানেল জয়ের পর তাঁর বাড়িতে ভিড় জমাতে থাকেন এলাকাবাসীরা। তাঁদের কথায় ছোট থেকে কঠোর পরিশ্রম করেছেন তিনি। এর ফল পেয়েছে। এলাকাবসীর আশা ছিল এবারও জয় নিয়েই ফিরবেন কালনার মেয়ে। আর তাই হল। অন্যদিকে মালোকাই চ্যানেল জয়ী সায়নী জানিয়েছেন, এইভাবে একদিন সপ্তসিন্ধু জয় করাই তাঁর স্বপ্ন।
Comments are closed.