‘হিন্দু ভাবাবেগকে অগ্রাহ্য করে গো-হত্যা ও গো-মাংস সরবরাহ করার ফল হাতেনাতে পেল কেরল। কারোরই উচিত না অন্যের ধর্মীয় আবেগকে আঘাত করা। যারাই হিন্দুদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও ভাবাবেগে আঘাত দেবে, তারা এভাবেই শাস্তি পাবে।’ কেরলের সাম্প্রতিক বিধ্বংসী বন্যা নিয়ে সোমবার এমনই মন্তব্য করলেন কর্ণাটকের বিজয়পুরার বিজেপি বিধায়ক বসনগৌড়া পাটিল ইয়াতনাল। তাঁর কথায়, প্রকাশ্যে গো-হত্যা করার যে পাপ কেরলবাসী করেছিল, হাতেনাতে এক বছরের মধ্যে তার ফল পেয়ে গেল তারা।
তবে কেরলের বন্যার সঙ্গে গো-হত্যার তত্ত্ব জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা এই প্রথম নয়। সর্বভারতীয় হিন্দু মহাসভার সভাপতি চক্রপানি মহারাজও দিন কয়েক আগে কিছুটা এই ধরনেরই মন্তব্য করেছিলেন। একধাপ এগিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘কেরলের যে সব বাসিন্দা গরু খান তাঁদের এই বিপর্যয়ের থেকে উদ্ধার করার দরকার নেই। বলেছিলেন, লোকজনকে উদ্ধার করার আগে জেনে নেওয়া উচিত, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি গো-মাংস খান কিনা। যদি তিনি হ্যাঁ বলেন, তাহলে তাঁকে কোনও সাহায্য না করাই উচিত হবে।’ কেরলের বন্যা নিয়ে এই কয়েকদিনে আরও নানা মত উঠে এসেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির তরফ থেকে। হিন্দু মক্কাল কাচি নামে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের এক নেতা দাবি করেছেন, ‘সবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার ফলেই এই অভিশাপ নেমে এসেছে কেরলের উপর।’
তবে কেরলের বন্যা নতুন কিছু নয়, বিভিন্ন বিষয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করে এর আগেও বিতর্কে জড়িয়েছেন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা। কখনও মহাভারতের যুগেও ইন্টারনেটের অস্তিত্ব ছিল বলে দাবি করে, কখনও শিক্ষিত বেকারদের পানের দোকান খোলার পরামর্শ দিয়ে কখনও বা সমালোচকদের নখ উপরে ফেলার পরোক্ষ হুঁশিয়ারি দিয়ে এর আগে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। উত্তর প্রদেশের এক বিজেপি সাংসদ হরি ওম পান্ডে দেশে বেড়ে চলা মহিলাদের উপর অত্যাচার ও ধর্ষণের ঘটনার জন্য মুসলিমরা দায়ী বলে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ান। কাঠুয়ায় আট বছরের এক নাবালিকাকে গণ-ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে এর আগে ‘ছোট ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের তৎকালীন উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা কবিন্দর গুপ্তা।
Comments are closed.