দৃষ্টিহীনদের জন্য ‘স্মার্ট স্টিক’ আসছে বাজারে, নেপথ্যে শিলিগুড়ির ছয় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া

দৃষ্টিহীনদের চলা ফেরার সুবিধের জন্য এবার বাজারে আসতে চলেছে বিশেষ ‘স্মার্ট ব্লাইন্ড স্টিক’। সৌজন্যে, শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছয় পড়ুয়া। জানা গিয়েছে, এই আবিষ্কারের নেপথ্যে থাকা ছয় পড়ুয়াই শিলিগুড়ির সুরেন্দ্র ইন্সটিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজের বি-টেক ইলেকট্রনিক্স কমিউনিকেশনের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁরা হলেন, অভিলাষ ঘোষ, চিন্ময় সরকার, শান্তনু নাথ, গৌরব চৌধুরী, জয়ব্রত দাস এবং গৌরবচন্দ্র ঘোষ। ছাত্রদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বিশেষ ব্লাইন্ড স্টিকে অত্যাধুনিক আলট্রাসোনিক সেন্সর এবং লাইট ডিপেন্ডেন্ট রেসিস্টার বা এলডিআর সেন্সর থাকবে, যা নির্দিষ্ট দূরে থাকা কোনো বস্তু বা গাড়িকে সহজেই চিহ্নিত করে ব্যবহারকারীকে দ্রুত বার্তা পাঠাতে পারবে। এর ফলে এই স্মার্ট স্টিক হাতে কোনও দৃষ্টিহীন রাস্তা পারের সময় বুঝতে পারবেন কত দূরে গাড়ি রয়েছে, আদৌ রাস্তা পেরোনো যাবে কিনা। এই স্টিক হাতে সহজেই কারও সাহায্য ছাড়াই দৃষ্টিহীনরা রাস্তায় চলাচলও করতে পারবেন।
তাঁদের এই সাফল্যের পেছনে কলেজের শিক্ষকদের যথেষ্ট অবদান রয়েছে বলে পড়ুয়ারা জানিয়েছেন। এই টিমের অন্যতম সদস্য অভিলাষ ঘোষ জানান,’এই ব্লাইন্ড স্টিক নিয়ে যথেষ্ট ভালো সাড়া মিলেছে। এখনও ব্র্যান্ডিংয়ের কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও, আগামী চার-পাঁচ মাসের মধ্যেই এই স্মার্ট স্টিকগুলি কলেজ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসবে।’ তিনি আরও জানান ‘এই স্মার্ট ব্লাইন্ড স্টিকগুলোকে তৈরি করতে খরচ হয়েছে এক হাজার টাকার কাছাকাছি।’ সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে যতটা সম্ভব কম লাভ রেখেই এগুলির বিক্রয় মূল্য ঠিক করা হবে। পাশাপাশি আগামী দিনে এর বাজারজাত মূল্য যাতে আরও কমানো যায় তা নিয়েও তাঁরা ভাবনা-চিন্তা করছেন। শিলিগুড়ি শহরের একটি প্রতিবন্ধী প্রতিষ্ঠানের হাতেই তাঁরা এই স্মার্ট স্টিকের প্রথম ‘প্রোটো-টাইপ’টি তুলে দিতে চান বলে পড়ুয়াদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে । প্রতিবন্ধী প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার আগে স্টিকগুলির প্রতিটি ডিভাইস কলেজের ল্যাবরেটরিতে ভালো মতো পরীক্ষা করা হয়েছে বলে কলেজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বাণিজ্যিক পরিকল্পনার পাশাপাশি পড়াশোনা, দুটো কীভাবে সামলানো যাবে, এই প্রশ্নের উত্তরে পড়ুয়াদের পক্ষ থেকে অভিলাষ ঘোষ জানান,’দুটোর চাপই থাকবে, তা সত্বেও এই ধরনের কাজ আগামী দিনে আরও হওয়া উচিত। শুধুমাত্র ইঞ্জিনিয়ারিংই নয় বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় ছাত্রদের মধ্যেও পড়াশোনার পাশাপাশি  প্রায়োগিক সৃষ্টিশীলতা থাকাটাই বাঞ্ছনীয়’।

Leave A Reply

Your email address will not be published.