ত্রিপুরায় প্রহসনের পঞ্চায়েত ভোট: ৯৮ শতাংশ আসন পেল বিজেপি, সিপিএমের ভোট ১ শতাংশেরও কম

প্রহসনের পঞ্চায়েত ভোটে ত্রিপুরায় প্রায় ৯৮ শতাংশ আসন একাই দখল করল বিজেপি। গত বিধানসভা ভোটে ৪৫ শতাংশ ভোট পাওয়া সিপিএম পঞ্চায়েতে পেয়েছে মাত্র ০.৩৪ শতাংশ ভোট। মন্দের ভালো কংগ্রেস।
বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার পঞ্চায়েতের ৮৬ শতাংশ আসন আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। ভোট হয় কেবলমাত্র রাজ্যের ১৪ শতাংশ আসনে। ২৭ শে জুলাই ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের মোট ৬,৬৪৬ টি আসনের মধ্যে মাত্র ৯৯৪ টি আসনে ভোট হয়। তার মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা ৮৩৩। সেখানে বিজেপি একাই জিতেছে ৬৩৮ টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছে ১৫৮ টি আসন এবং সিপিএম পেয়েছে ২২ টি আসন। পঞ্চায়েত সমিতির ৮২ টি আসনের মধ্যে বিজেপি দখল করেছে ৭৪ টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছে ৬ টি এবং সিপিএম পেয়েছে ১ টি আসন। বাকি ৬ টি আসনে নির্দলেরা জয়ী হয়েছে। ৮ টি জেলা পরিষদের ১১৬ টি আসনের মধ্যে ভোট হয়েছিল ৭৯ টি আসনে। তার মধ্যে বিজেপি দখল করেছে ৭৭ টি এবং কংগ্রেস ২ টি। সব মিলিয়ে ৬,৬৪৬ টি আসনের মধ্যে বিজেপি একাই জিতেছে ৬,৪৪১ টি আসন, যা প্রায় ৯৮ শতাংশ।
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসন দখলের হিড়িক পড়ে ত্রিপুরাজুড়ে। মনোনয়ন পেশ শেষের আগেই রাজ্যের প্রায় ৮৬ শতাংশ আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পকেটে পুরে ফেলে বিজেপি।
ভোটের আগেই বারবার বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছে সিপিএম সহ বিরোধীরা। বিরোধীদের অভিযোগ, তাদের আশঙ্কাকে সত্যি করে ভোটের দিন বেলাগাম সন্ত্রাস করে বুথমুখী জনতাকে ঘরে আটকে রেখেছিল বিজেপি। ভোট দিতে বাধা দেওয়ার ঘটনাও একাধিক। যদিও বিজেপির তরফে বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগকেই উড়িয়ে দেওয়া হয়। লোকসভা ভোটের সময়ও একাধিকবার ত্রিপুরায় নির্বাচনের দিন বদলেছে। সিপিএমের অভিযোগ, দীর্ঘ বাম শাসনে যা কখনও হয়নি। লোকসভা ভোট পিছিয়ে দেওয়ার ঘটনাই প্রমাণ করে ত্রিপুরায় গুণ্ডারাজ চালাচ্ছে বিজেপি, অভিযোগ সিপিএমের।
ভোট হওয়া আসনগুলোর সামগ্রিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে বামেদের তুলনায় ভালো ফল করেছে কংগ্রেস। যদিও এই বিষয়টিকে গুরুত্বই দিতে চায়নি সিপিএম। সিপিএমের বক্তব্য, বিজেপি সরকার গড়ার পর রাজ্যজুড়ে আক্রান্ত হয়েছেন শুধু বামেরা। বাম ভোটারদের বেছে বেছে বুথে যেতে দেওয়া হয়নি। পুলিশ-প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে বাম মনোভাবাপন্নদের হুমকি এবং মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে জেলবন্দি করা হয়েছে। ব্যাপক সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করে সরাসরি ঘোষণা করা হয়েছে, সিপিএমকে একটিও ভোট দেওয়া যাবে না। এই সব উপেক্ষা করেও যে মানুষ সিপিএমকে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাদের পার্টির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

Comments are closed.