মহারাষ্ট্র সরকারের অনুরোধে কোভিড ১৯ যুদ্ধে লড়তে কেরল থেকে মুম্বই ছুটে গিয়েছিলেন ৪০ জন চিকিৎসক। কিন্তু অভিযোগ, গত দু’মাস রোগীদের সেবা করেও কানাকড়ি দেয়নি বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন বা BMC। বেতন না পাওয়ার অভিযোগে ১৫ জন চিকিৎসক কেরলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বলে খবর। বাকি ২৫ জন ডাক্তারও আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে বাড়ি ফেরার তোড়জোড় শুরু করেছেন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সূত্রে পাওয়া গিয়েছে এই খবর।
দেশে করোনা মোকাবিলায়, প্রথম ধাপে বেশ ভালো পারফরমেন্স কেরলের। একই সময় শোচনীয় অবস্থা মহারাষ্ট্রের। এই পরিস্থিতিতে উদ্ধব ঠাকরে সরকারের অনুরোধে ৪০ জন চিকিৎসক ও ৩৫ জন নার্স পাঠিয়েছিল কেরলের বাম সরকার। গত ৯ জুন ওই চিকিৎসক ও নার্সরা মুম্বইয়ে পা দেন। বিএমসি-র তৈরি সরকারি কোভিড হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় হাত লাগান তাঁরা। প্রত্যেক স্পেশালিস্ট ডাক্তারকে ২ লক্ষ টাকা, এমবিবিএস পাশ চিকিৎসককে ৮০ হাজার এবং নার্সদের ৩৫ হাজার টাকা করে বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল BMC। কিন্তু গত সপ্তাহ থেকে চিকিৎসকেরা অভিযোগ করতে শুরু করেন, তাঁদের বেতন তো দূর অস্ত, যাতায়াতের খরচই এখনও মেটায়নি বিএমসি। অন্যদিকে ইউনাইটেড নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের এক আধিকারিক জানান, মুম্বইয়ের সেভেন হিলস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে নার্সদের নিয়োগ করেছে তাঁরা সবাই স্যালারি পেলেও বিএমসি যাঁদের নিয়োগ করেছে তাঁরা একটি পয়সাও পাননি।
কেরল থেকে মহারাষ্ট্রে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়তে আসা ৪০ জন চিকিৎসকের অভিযোগ, বারবার বেতন দেওয়ার তারিখ পিছিয়ে চলেছে বিএমসি। প্রথমে বলা হয় ৫ জুলাইয়ের মধ্যে সবার বেতন মিটিয়ে দেওয়া হবে। তারপর বলা হয় ১০ জুলাই, শেষে আরও তিন দিন সময় নেওয়া হয়। কিন্তু বেতন মেলেনি।
এদিকে মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে চিঠি লিখে আরও চিকিৎসক ও নার্স চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
কিন্তু কেন তাঁদের বেতন নিয়ে টালবাহানা? বিএমসির এক পদস্থ আধিকারিক দেরির কোনও কারণ জানাননি। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ফাইল নাড়াচাড়া হয়েছে। শীঘ্রই ওই চিকিৎসকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পারিশ্রমিক পৌঁছে দেওয়া হবে।
ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে এই খবর প্রকাশিত হতেই তোলপাড় পড়ে যায়। শুক্রবার বেশি রাতে সিনিয়র সাংবাদিক ফায়ে ডিসুজা জানান, বিএমসির দাবি, ডাক্তার ও নার্সদের বেতন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ট্রাভেল ক্লেমও সঙ্গে সঙ্গে মঞ্জুর করা হচ্ছে। কেরলের মেডিক্যাল টিমের কেউই বেতন না পাওয়ার কারণে ফিরে যাচ্ছেন না।
Comments are closed.