দেশে করোনা সংক্রমণ কমার লক্ষণ নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৭৭,২৬৬ জন। যা এখনও পর্যন্ত সর্বকালীন রেকর্ড। টানা ২২ দিন ধরে দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে বিশ্বে এক নম্বরে ভারত। মৃত্যু হয়েছে ৬১ হাজারেরও বেশি মানুষের। এই পরিসংখ্যানে একমাত্র আশার আলো বাংলা সহ কয়েকটি রাজ্যে সুস্থতার হার।
স্বাস্থ্য দফতরের তরফে সর্বশেষ পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে রাজ্যে সুস্থতার হার পেরিয়েছে ৮০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত ২,৯৯৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। কিন্তু আশার কথা রাজ্যে সুস্থতার হার। সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলায় সুস্থতার হার ৮০.২৮ শতাংশ। যা জাতীয় গড়ের চেয়েও অনেক ভালো। ২৭ অগাস্ট রাজ্যে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪২,৪৭৪ টি।
এদিকে দেশে ক্রমাগত বেড়ে চলা সংক্রমণ পর্যালোচনায় বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় সরকার। ক্যাবিনেট সেক্রেটারি রাজীব গৌবার নেতৃত্বে ওই বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছিলেন বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবরা। ছিলেন বাংলার মুখ্যসচিব রাজীবা সিনহাও। সেই বৈঠকেই করোনা মোকাবিলায় টেস্ট আরও বাড়াতে রাজ্যগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন ক্যাবিনেট সেক্রেটারি। এখন কেন্দ্রের মূল মাথাব্যথার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে নতুন নতুন এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া। রাজীব গৌবার মতে নতুন সংক্রমণ আটকে দিতে পারলে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। তবে সেজন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি। এই প্রসঙ্গেই বাংলার ভূয়সী প্রশংসা করেন কেন্দ্রীয় সচিব। বস্তুত করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলা যে ধারাবাহিক পদক্ষেপ করেছে তা নিয়ে উচ্ছ্বসিত রাজীব গৌবা এবং নীতি আয়োগের ভিকে পল।
মুখ্যসচিবের উপস্থিতিতে রাজ্যের কোভিড পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের ভূয়সী প্রশংসা করে কেন্দ্র। পাশাপাশি কো-মর্বিডিটি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের পৃথক সমীক্ষাকে সময়োচিত ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। নীতি আয়োগের ভিকে পলের মতে বাংলার এই পদক্ষেপই গেম চেঞ্জার হতে চলেছে। দেশের অন্যান্য রাজ্যেরও বাংলার পথ অনুসরণ করা উচিত বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দেশের ক্যাবিনেট সেক্রেটারি রাজীব গৌবা। এছাড়া রাজ্যে সিরিয়াস রোগীদের জন্য হাসপাতালের বেড ফাঁকা রাখার উপায় হিসেবে যেভাবে সেফ হোম, টেলি মেডিসিন এবং বাড়িতে থেকে চিকিৎসা পরিষেবা চালু করেছে রাজ্য সরকার, তার জন্যও কেন্দ্র পিঠ চাপড়ে দিয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিবের। ক্যাবিনেট সেক্রেটারি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জানিয়েছেন, এবার বাংলার টার্গেট হোক মৃত্যুহারকে ১% এর নীচে নিয়ে আসা। যেভাবে এক মাসের মধ্যে মৃত্যুহার ৪.৫% থেকে কমে ২% হয়েছে, তাতে বাংলার প্রশাসন আশাবাদী দ্রুতই কেন্দ্রের ঠিক করে দেওয়া লক্ষ্য পূরণেও সক্ষম হবেন তাঁরা।
Comments are closed.