নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে পথে নেমেছেন মানুষ। কেউ করছেন বিরোধিতা, আর কারও মুখে আইনের গুণগান। কিন্তু ধন্দ কাটছে না। এই প্রেক্ষিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের নয়া ব্যাখ্যা (Citizenship Of India) হাজির করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ১৯৮৭ সালের আগে ভারতে জন্ম হলে অথবা যাঁদের বাবা-মা ১৯৮৭ সালের আগে এ দেশে জন্মেছেন, আইন মোতাবেক তাঁরা ভারতের প্রকৃত নাগরিক।
২০০৪ সালে করা নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনীতে ভারতের নাগরিক হওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি মানদণ্ড নির্দিষ্ট করা রয়েছে। আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, কী সেই মানদণ্ড, যা পাশ করলেই আপনি ভারতের নাগরিক (Citizenship Of India)।
এই আইন মোতাবেক, একজন নিজেকে ভারতের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন, যদি তিনি ২৬ জানুয়ারি ১৯৫০ সালে কিংবা তার পরে ভারতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে যাঁরা ভারতে জন্মেছেন, তাঁরা সকলেই ভারতের নাগরিক। যদি কারও জন্ম হয় ১ জুলাই ১৯৮৭-র পর কিন্তু ২০০৪ সালের ৩ ডিসেম্বরের আগে এবং বাবা-মায়ের মধ্যে কেউ একজন ভারতের নাগরিক, তাহলে তিনিও ভারতের নাগরিক হিসেবেই গণ্য হবেন। শেষ ধাপে বলা হয়েছে, ২০০৪ সালের ৩ ডিসেম্বর কিংবা তার পরে যাঁরা জন্মেছেন এবং যাঁদের মা-বাবার মধ্যে একজন ভারতের নাগরিক এবং অন্যজন অবৈধ অনুপ্রবেশকারী নন, তাঁরাও ভারতের নাগরিক হিসেবেই গণ্য হবেন।
যাঁরা ১৯৯২ সালের ১০ ডিসেম্বর কিংবা তার পর এবং ২০০৪ সালের ৩ ডিসেম্বরের আগে, দেশের বাইরে কোথাও জন্মেছেন, যাঁদের মা-বাবা তাঁর জন্মের সময় জন্মসূত্রে ভারতের নাগরিক, সেই সন্তানরাও ভারতের নাগরিক হবেন।
শুক্রবার অমিত শাহের মন্ত্রকের তরফে ট্যুইট করে আরও জানানো হয়, জন্মের তারিখ কিংবা জন্মের স্থান নির্দেশ করে এমন যে কোনও নথি দিয়ে ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণ করা যাবে।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ধন্দের জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র। তিনি জানিয়েছেন, নিরক্ষর মানুষের কাছে কোনও সরকারি নথি নাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ তাঁকে বা তাঁদের সাক্ষী দাখিল করা কিংবা সম্প্রদায়ের সহনাগরিকদের সহমতির ভিত্তিতে প্রমাণ হাজির করার অনুমতি দেবেন।
সব মিলিয়ে নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যখন দেশে চলছে লাগাতার বিক্ষোভ-আন্দোলন, তখন সাধারণ মানুষের কাছে আইনের খুঁটিনাটি ব্যাখ্যায় আরও জোর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু ধোঁয়াশা কাটছে কি?
Comments are closed.